Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গণহারে ফেল কেন— আন্দোলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা

তিতুমীর কলেজ করেসপন্ডেন্ট
২৯ আগস্ট ২০২১ ১৬:০৩

ঢাকা:  রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থীরা। ‘গণহারে ফেল কেন’ এই দাবি নিয়ে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।

রোববার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টায় নীলক্ষেত মোড়ে জড়ো হয়ে ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন অন্যথায় আগামী দশ দিনের মধ্যে বিশেষ পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো- পরীক্ষার খাতা সঠিকভাবে পুনর্মূল্যায়ন, শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মাধ্যমে ক্লাস যাচাই, যেকোনো ধরনের একাডেমিক সমস্যা নিজ কলেজের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে, সব বিভাগের ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ এবং বিভিন্ন বিভাগের আটকে থাকা পরীক্ষার ফলাফল আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।

আন্দোলনরত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নাহিয়ান বলেন, আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি নিয়েই মাঠে নেমেছি। আমাদের অনার্স শেষ করতে ছয় বছর লেগে গেছে। এমন ফলাফল বিপর্যয় আমাদের কাম্য নয়। আমাদের দাবিগুলো পূরণ করা হোক। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের কলেজ প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগে সমস্যার সমাধান হওয়ার দাবি করছি।

সরকারি বাংলা কলেজে শিক্ষার্থী ওসমান গনি বলেন, আমারা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী, আমাদের ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। আমাদের প্রত্যেককে গড়ে একটি বিষয়ে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমারা সম্পূর্ণ সিলেবাসে ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা ২ ঘণ্টায় দিয়েছি। কিন্তু আমাদের খাতা মূল্যায়ন কিভাবে করা হয়েছে তা আমরা জানতে চাই। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো ডিপার্টমেন্টে জানিয়েছি, বোর্ড চ্যালেঞ্জ করেছি। কোনো সদুত্তর না পেয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।

আন্দোলনকারী ইডেন কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের রেজাল্ট হয়েছে দেড় মাস আগে। আমরা ২০০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৯৩ জন ফেল। আমরা সবাই কি গাধা? ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল? আমরা প্রথম, দ্বিতীয় বর্ষে ফার্স্টক্লাস পাইনি? আমরা অধ্যক্ষ, সমন্বয় কমিটি, ঢাকা ভার্সিটিতেও গিয়েছি। কিন্তু আমারা কোনো আশা পাইনি। উনারা কিছুই করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। আমরা অসহায় হয়ে আন্দোলনে নেমেছি৷ আমাদের দাবি খাতা যেন পূর্নমূল্যায়ন করা হয়। করোনার এই দুঃসময়ে একটি বিষয়ের জন্য আমাদের ফের এক বছর ঝুলে থাকতে হবে।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। তবে এখন পর্যন্ত ছয় কলেজের শিক্ষার্থীদের ফল এবং কোনো প্রস্তাবনা পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের যে সংখ্যাটি বলছে, সেটি নিশ্চিত করে জানতে পারিনি। শিক্ষার্থীদেরকে আমরা বলেছি, সংশ্লিষ্ট কলেজ এবং বিভাগে যোগাযোগ করতে। সেখান থেকে প্রস্তাবনা পাঠাতে, যেন আমরা সেটি বিশ্লেষণ করে একটি চূড়ান্ত প্রস্তাবনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাতে পারি।’

নীলক্ষেত মোড়ে দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার ইহসানুল ফেরদৌস বলেন, আজকে সকাল থেকেই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে জড়ো হচ্ছিল। তাদের একটি দাবি ছিল, গণহারে ফেল করার কারণে তাদের শিক্ষাজীবনের ক্ষতি হচ্ছে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আইকে সেলিম উল্লাহ স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু এটি শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা, আমরা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। আমরা প্রতিষ্ঠানের কাছে আমাদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিব, তারা যেন গুরুত্ব সহকারে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়।

সারাবাংলা/এনএসএম/এসএসএ

সাত কলেজের আন্দোলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর