Thursday 28 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমাদের পথ মসৃণ না, পায়ে পায়ে শত্রু আছে: শেখ হাসিনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২১ ১৩:২২

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি উদ্দেশে বলেছেন, আমাদের পায়ে পায়ে শত্রু আছে, পদে পদে বাধা আছে। আমাদের চলার পথ মসৃণ না, কণ্টাকাকীর্ণ। আমাদের চরাই-উৎরাই পার হয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সভার শুরতে সূচনা বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান। মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।

প্রসঙ্গত, জাতীয় শোক উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মাসব্যাপী কর্মসূচি আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শেষ হল।

সভার শুরুতে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের নিহত শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রকাশনা পত্রিকা ‘মাতৃভূমি এবং জয় বাংলা’ ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধস্ত একটি দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছিল তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এবিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বিজয় অর্জনের পর স্বাধীনতার পর সেই ১৯৭২ সাল থেকেই কিন্তু চক্রান্ত শুরু। সেই চক্রান্ত মোকাবেলা করেই বাংলাদেশকে তিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

এসময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি আদায় করা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ লাভ করা এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের পথগুলি তৈরি করে দিয়ে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। মাত্র ১২ বছরের মধ্যে আজ বাংলাদেশ উঠে দাঁড়িয়েছে বলেও দাবি করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

‘যখন পরাজিত শক্তি দেখল যে আর বাংলাদেশকে বাধা দিয়ে রাখা যাবে না। তখনি কিন্তু ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছিল তারা। সেই কথাটা মনে রেখেই কিন্তু আমাদের পথ চলতে হবে যে, আমাদের পায়ে পায়ে শত্রু আছে পদে পদে বাধা আছে। আমাদের চলার পথ মসৃণ না। কণ্টাকাকীর্ণ। আমাদের চরাই-উৎরাই পার হয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা এগিয়ে যাচ্ছি’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

নিজে ছাত্রলীগের সাধারণ একজন কর্মী থেকে দলের প্রয়োজনে যখন যেখানে যে পদ আমাকে দলের যদি দিতে হয় সেটা নিয়েছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কোন আকাঙ্ক্ষা ছিল না। এটা হতে হবে ওটা হতে হবে। কিন্তু ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করতাম। সাথে সাথে আমার ভাই কামাল ঢাকা কলেজের ছাত্র হিসাবে, সেও কিন্তু সংগঠনের জন্য কাজ করেছে। আমাদের পরিবারে সবাই আমরা কিন্তু খুব সক্রিয় ছিলাম। কিন্তু আমরা কখনো ভাবি নাই, কোন কিছু একটা হতে হবে।’

১৫ আগস্টের পরে জিয়াউর রহমান আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। রেহানার পাসপোর্ট রিনিউ করতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ যখন আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করে আমি এরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসি। তখন অনেক বাধা দেয়া হয়েছিল। অনেক ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল, সেকথাও নেতাকর্মীদের স্মরণ করে দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আমি দেখেছি, আমার দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে আর আমি একটা সুযোগ পাচ্ছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করার এবং তখন সাধারণ মানুষের কাজ থেকেও সাড়া পেয়েছি বিপুলভাবে। কাজেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি দেশে ফেরার।’

নিজের ছোট দুই ছেলে-মেয়েকে বিদেশে ছোট বোন শেখ রেহানার কাছে দিয়ে দেশে ফিরে আসার প্রসঙ্গও স্মৃতিচারণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে সফল করতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে, এই একটি সিদ্ধান্ত নিয়েই কিন্তু আমি ফিরে এসেছিলাম।’

দেশে ফিরে আসার পর তৎকালীন স্বৈরশাসকদের বিভিন্ন বাধার কথা উল্লেখ করে তাদের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন এই ধানমন্ডির-৩২ নম্বর খুলে দেয়নি। যেতে দেয়নি। আর এই নামটা তো মুছেই ফেলে দিয়েছিল। আজকে সারাবিশ্বে ৭ মার্চের ভাষণ যেমন আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে, আজকে বঙ্গবন্ধুর নাম সারাবিশ্ব জানে। আর কারও পক্ষে এটা মুছে ফেলা সম্ভব না। সেটা সম্ভব হয়েছে, আমরা আদর্শ নিয়ে চলেছি, লক্ষ্য স্থির করে চলেছি সেই কারণে। কাজেই বলবো সংগঠনের সকল নেতাকর্মী জাতির পিতার আদর্শটা উপলব্ধি করতে হবে। ধারণ করতে হবে এবং সেটা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

সারাবাংলা/এনআর/এমও

আওয়ামী লীগ পথ মসৃণ শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর