‘স্বাধীন মত প্রকাশ থেকে বিরত রাখতে জুলহাজ-তনয়কে হত্যা’
৩১ আগস্ট ২০২১ ১৭:৪৪
ঢাকা: জননিরাপত্তা বিপন্ন করে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে মত প্রকাশ ও স্বাধীন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে আসামিরা জুলহাজ মান্নান ও তনয়কে হত্যা করেন বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন বিচারক।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত রাজধানীর কলাবাগানে জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
এদিন রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত ছয় আসামি মেজর জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ, আসাদুল্লাহ এবং আকরাম হোসেন আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসেবে সাংগঠনিকভাবে জুলহাজ মান্নান ও তনয়কে হত্যায় গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা গ্রহণ করে। সেজন্য ছয় আসামিকে সাজা প্রদান করা হবে বাঞ্চনীয়।
তিনি আরও বলেন, জুলহাজ মান্নান ও তনয় হত্যায় অংশ গ্রহণকারী আসামিরা বেঁচে থাকলে আনসার আল ইসলামের বিচারের বাইরে থাকা সদস্যরা একই অপরাধ করতে উৎসাহ পাবে। আসামিদের কারও ভূমিকা ছোট বড় করে দেখার সুযোগ নাই। কাজেই এ আসামিরা কোনো সহানুভূতি পেতে পারে না। সেজন্য ৬ আসামিকে সন্ত্রাস বিরোধ আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেই ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে। এতে একদিকে নিহতের আত্মীয়রা শান্তি পাবেন। অন্যদিকে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে ভয় পাবে এবং নিরুৎসাহিত হবে।
বিচারক আরও রায়ে উল্লেখ করেন, আসামিরা সব নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য এবং সমকামীদের নিয়ে র্যালি করাসহ তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠার দায়ে জুলহাজ মান্নান ও তনয়কে তারা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে প্রবেশ করে ইউএসএইড কর্মকর্তা এবং সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র মামলাটি দায়ের করেন।
২০১৯ সালের ১২ মে আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। পরের বছর ১১ নভেম্বর চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। চার্জশিটভুক্ত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
নিহত জুলহাস বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের আগে ‘রূপবান’ সম্পাদনার পাশাপাশি উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি’তে কাজ করতেন জুলহাজ।
সারাবাংলা/এআই/এনএস
