‘ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে শ্রমিকদের জন্য’
৩১ আগস্ট ২০২১ ২১:৩৫
ঢাকা: ভবিষ্যতে দেশের পোশাক খাতে শ্রমিকদের জন্য সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ বা মনযোগ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বেসকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ও ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক: ভবিষ্যৎ চিন্তা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘পোশাক খাতে আগামীতে যে জায়গায় সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ বা মনযোগ প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, শ্রমিকদের জন্য বিনিয়োগ। ভবিষ্যতে শ্রমিকের অবস্থানটা কী হবে তা জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন এবং আগামীতে যারা কাজ করতে আসবেন- তাদের আয়, মজুরি ও প্রকৃত আয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। এবং সেইসঙ্গে তাদের আয়বহির্ভূত বিভিন্ন সুবিধাও গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের শ্রমিক বা নতুন করে যারা শ্রমিক হিসাবে আসবে তাদেরকে শুধুমাত্র আয়ের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে হবে না। তার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক সামাজিক সক্ষমতা এগুলো দেখার প্রয়োজন হবে। এবং এখানেই তার নতুন দক্ষতা নিহিত আছে। শ্রমিকদের জন্য আপৎকালীন তহবিল থেকে একটা ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পণ্য ও উৎপাদনে পরিবর্তন এসেছে। পণ্যের মান ও কৌশলে পরিবতর্ন এসেছে। উৎপাদন কৌশলের পরিবর্তন এসেছে। উৎপাদনশীলতার উপরও চাহিদা পরিবর্তন হচ্ছে। এই বিষয়গুলো বাংলাদেশ কীভাবে হ্যান্ডেল করবে আগামীতে সেটাই বড় বিষয়।’
দেবপ্রিয় বলেন, ‘যেসব শ্রমিকের কর্মজীবন শেষ হয়ে যাবে তাদের সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের অধিকার ও দর কষাকষি নিশ্চিত করতে হবে। আর এসব বিষয় করতে হবে নারী শ্রমিকদের উপর মনযোগ দিয়ে।’
ভার্চুয়াল সংলাপে সিপিডির আরেক সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিকদের জন্য পেনশন বা প্রভিডেন্ট ফান্ড করা যেতে পারে কি না তা নিয়ে ভাবতে হবে। শ্রমিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এটা করার দরকার। পোশাক খাতে বড়ধরনের পরিবর্তন বা অটোমেশন না করে ভবিষ্যতে টেকা যাবে না। শ্রমিকদের জন্য মধ্যমেয়াদী হেল্থ ইন্সুরেন্সের বিষয়টিও ভাবতে হবে।’
বিজিএমএইএ’র সাবেক সভাপতি ও সংগঠনটির পরিচালক রুবানা হক বলেন, ‘পোশাক খাতের জন্য দেশের বাইরে থেকে আমরা সেলাই মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানি করে থাকি। এতে বড় অংকের অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আমরা দেশের লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে মনযোগ দিতে পারি। খাতটির উন্নয়নে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা দরকার, যাতে ভবিষ্যতে বাইরে থেকে কোন যন্ত্রপাতি কিনে আনতে না হয়।’
অনুষ্ঠানে ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর পংকজ কুমার, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আখতার, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ বক্তব্য দেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম