আগস্টে ১১২ ধর্ষণ, ৫৮ নারীর আত্মহত্যা
৩১ আগস্ট ২০২১ ২২:২৫
দেশে আগস্ট মাসে ১১২ জন নারী ও শিশু-কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা ছিল ১৭টি, ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ছিল একটি। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৩টি ঘটনায়। একই সময়ে ১৯টি শিশু-কিশোরীসহ ৫৮ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন।
বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) আগস্ট মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও নিজস্ব উদ্যোগে সংগৃহীত তথ্য দিয়ে এমএসএফ এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) এটি প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, আগস্ট মাসে সারাদেশে ৩৩২ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮১টি, গণধর্ষণের ঘটনা ১৭টি, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা একটি, প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধষর্ণের ঘটনা ঘটেছে ১৩টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার ৮১ জনের মধ্যে ৬১ জনই শিশু ও কিশোরী। অন্যদিকে গণধর্ষণের শিকার ১৭ এবং ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার শিকার ৯ জনই শিশু ও কিশোরী। এর বাইরেও আগস্ট মাসে ২১টি ধর্ষণচেষ্টা, ২৫টি যৌন হয়রানি ও ৪৮টি শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে ১৯টি শিশু-কিশোরীসহ মোট ৫৮ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অ্যাসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছে এক শিশু ও দুই কিশোরী। অপহরণের শিকার হয়েছে একটি শিশু ও তিনটি কিশোরী। একই সময়ে আট জন শিশু, কিশোরী ও নারী নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়াও আগস্ট মাসে ৯ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ বিভিন্ন বয়সী মোট ৬১ জন নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে শিশু ও কিশোরী রয়েছে ১৬টি।
গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এমএসএফ বলছে, পারিবারিক বিরোধ, প্রতিশোধ, যৌতুক ইত্যাদি কারণে এ হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে। ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার পাঁচটি ঘটনা অবৈধ সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়। দুইটি ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় স্থানীয় থানা কর্তৃপক্ষ এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, আগস্ট মাসে দুই নবজাতকসহ সাত শিশুর মরদেহ বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এমএসএফ মনে করে, শিশুহত্যার এই ঘটনাগুলো অমানবিক ও নিন্দনীয়। এছাড়াও শিশুদেরকে কী কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা জানার চেষ্টাও করে না।
দেশব্যাপী ধর্ষণ, শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা যে হারে ঘটে চলেছে, তাতে করে সামাজিক সুরক্ষা, রাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিরন্তর প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে বলছে এমএসএফ।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর