অভিযোগপত্র গ্রহণ, প্রদীপ-চুমকির বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু
১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৪৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। পাশাপাশি প্রদীপের পলাতক স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ-১ শেখ মো. আশফাকুর রহমান অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২-এর উপসহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন গত ২৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
দুদকের কৌঁসুলী মাহমুদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগপত্রটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। পরে শুনানি শেষে আদালত বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। পলাতক আসামি চুমকি কারণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ও ক্রোক পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার আগামী ধার্য তারিখে এ বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন আদালত। প্রদীপের জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত নামঞ্জুর করেছেন।’
শুনানির সময় প্রদীপ কুমার দাশকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। আদালতে বোনসহ কয়েকজন স্বজন তার সঙ্গে দেখা করতে যান।
দুদকের দাখিল করা ১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে শুধু দু’জন আসামি হিসেবে আছেন। তারা হলেন— প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি। সাক্ষী করা হয় ২৯ জনকে।
গত বছরের ২৩ আগস্ট দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এরমধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ‘ওসি প্রদীপ’ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ করে। আরও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়।
তদন্তের পর দাখিল করা অভিযোগপত্রে প্রদীপের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে সেই সম্পদ স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করা হয়। এছাড়া উভয়ের বিরুদ্ধে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখের তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করে দুদক।
অভিযুক্ত প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তাদের নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি কারণ সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। তবে প্রদীপের সম্পদ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে চুমকি পলাতক আছেন।
গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন প্রদীপ কুমার দাশ। ওই মামলায় কক্সবাজারের আদালতে ইতোমধ্যে প্রদীপসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এএম