১৩ সেপ্টেম্বর খুলছে মেডিকেল, ডেন্টাল ও নার্সিং কলেজ
২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:৪৫
ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিফড-১৯) সংক্রমণ কমে আসায় আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর দেশের সকল মেডিকেল, ডেন্টাল ও নার্সিং কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, জাতীয় কারিগরি কমিটি, সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রিন্সিপালসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নিয়ে এসকল পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং কলেজ, আইএসটি ম্যাটস এবং ডেন্টাল কলেজ মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০০’র বেশি। এসকল প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী। গত দেড় বছর ধরে তারা সশরীরে ক্লাস না করে অনলাইনে ক্লাস করছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ দিতে হয়েছে দফায় দফায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিল্প কারখানা ও গণপরিবহনও বন্ধ রাখতে হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মেডিকেল সেক্টর এমন একটা জায়গা, যেখানে শিক্ষাগ্রহণের জন্য ডাক্তারদের রোগীর কাছে যেতেই হবে। যদি তারা না যায় তাহলে তাদের শিক্ষা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। এসব চিন্তা করেই সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে পাঠদান শুরু করা হবে। তা না হলে একটা বড় গ্যাপ হয়ে যাবে। আর গ্যাপ হয়ে গেলে আমরা ভবিষ্যতে ডাক্তার পাবো না। এসব চিন্তা থেকেই প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ এবং পঞ্চম বর্ষের ক্লাস সশরীরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেজন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সব নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষকদের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। শিক্ষার্থীদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করেছি। যখন তারা ক্লাসে যাবেন, তখন তাদের অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া অন্যান্য যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেসব নেওয়া হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একবারে খুলে না দিয়ে ধাপে ধাপে খুলব। খোলার পর আমরা দেখব কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দেয় কি না। যদি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সেভাবে ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের রোগীর কাছে যেতে হবে। এজন্য সকল শিক্ষার্থীকে বিশেষ করে দ্বিতীয় ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে পাঠাতে হবে। তারা রোগীদের সামনাসামনি দেখবে, সেখান থেকে তারা শিখবে। শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য সাধারণ রোগীদের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রয়োজনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কাছেও নিয়ে যাব। তবে সেটা যথাযথ সুরক্ষার মাধ্যমে। আমরা ইতোমধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছি এবং পেশাগত পরীক্ষা চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থনীতিসহ সকল পর্যায়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। বাংলাদেশে ১৫ লাখ লোক কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আমাদের কোভিড মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। ১৭ হাজার বেড তৈরি করতে হয়েছে। ১২৩টি অক্সিজেন লাইন, ফিল্ড হাসাপাতাল বানাতে হয়েছে, সাড়ে ৭শ ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে। চার হাজার চিকিৎসক এবং ৮ হাজার নার্স নিয়োগ দিতে হয়েছে। মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ের আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট দফতর ও বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ