Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতি প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:২১

ঢাকা: ব্যয় বাড়ছে ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ’ প্রকল্পে। সেই সঙ্গে ২ বছর বাড়ছে মেয়াদও। এ জন্য প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ১১৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সেখান থেকে ৯৩ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা বেড়ে এখন ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ২১২ কোটি ৩৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৫ কোটি ২২ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং প্রকল্প ঋণ থেকে ১৯৭ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

বিজ্ঞাপন

এটি বাস্তবায়িত হলে আবহাওয়া জলবায়ু ও নদ নদীর সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কিত উন্নত মানের পরিষেবা এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য কৃষকের কাছে পৌঁছানো এবং এ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের উন্নত পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ২ জুন অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। দুর্যোগপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও আবহাওয়া ও জলবায়ু নদ-নদীর পানির অবস্থা, আগাম সতর্কীকরণ সম্পর্কিত তথ্যাদি কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এ দেশ অনেক পিছিয়ে আছে। এ বিষয়ে কারিগরি দিক থেকে উন্নত মানের এবং নির্ভরযোগ্য কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। টেকসই কৃষি উৎপাদনের জন্য কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য কৃষকদের কাছে তাদের উপযোগী ভাষায় সরবরাহ করা একান্ত প্রয়োজন। এই তথ্যাদি কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনা নেওয়ায় সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ২০১২ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা একটি কারিগরি সেমিনার আয়োজন করে। এই সেমিনারে অংশগ্রহণকারী দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞগণ বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া সেবার মান তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকরভাবে বৃদ্ধির জন্য তিনটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেন, আবহাওয়াবিদ ও কৃষিবিদদের সমন্বয়ে কৃসি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি মৌসুমী পূর্বাভাস, কৃষি আবহাওয়া পূর্বভাস ও পরামর্শ সেবার মান বৃদ্ধি।

কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস ও পরামর্শ সেবা তৃণমূল পর্যায়ে নিয়মিত ও দ্রুত পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি দ্রুত ও কার্যকর যোগাযোগ ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন। কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস ও পরামর্শ সেবা তৃণমূল পর্যায়ে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে একটি সঠিক সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থার প্রবর্তন।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে বাংলাদেশ এগ্রো-মেট্রোলজিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম পোর্টাল স্থাপন। প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন। নির্ভরযোগ্য কৃষি আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত প্রস্তুতকরণ এবং তা বিভিন্ন সম্প্রসারণ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

প্রকল্প সংশোধনের মূল কারণ, কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক প্রয়োগিক গবেষণা, ১২টি কমিউনিটি রেডিও স্থাপন। কৃষি আবহাওয়া বিষয়ে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক নতুন বিভাগ চালুর জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রাপ্তি এবং সে অনুযায়ী নতুন কার্যক্রম অন্তভুক্ত করা হয়েছে। ভ্যাট প্রভিশন, টেন্ডার, ট্যাক্স প্রভিশন, প্রাইস কন্টিনজেন্সি এবং অন্যান্য খাতে সাশ্রয় করা ৪২ কোটি ৩৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকার সমন্বয়।

প্রকল্পের আওতায় ৪৮৭টি উপজেলা অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বর্তমানের উপজেলার সংখ্যা ৪৯২টি, সকল উপজেলায় প্রকল্প কার্যক্রম চালুর উদ্দেশ্য প্রকল্প বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের এক বছর পর প্রকল্প শুরু হওয়ার কারণে সকল কার্যক্রম চলতি বছরের জুনের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সম্পন্ন করা সম্ভব নয় তাই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ২ বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আবহাওয়া জলবায়ু ও নদ নদীর সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কিত উন্নত মানের পরিষেবা এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য কৃষকের কাছে পৌঁছানো এবং এ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের উন্নত পদ্ধতি ব্যবহারে ডিএইর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২৪ বলে ০ রানে জাকিরের লজ্জার রেকর্ড
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:১৮

সম্পর্কিত খবর