তালেবানের সক্ষমতা কেউ বুঝতে পারেনি
৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১০:৪২
আফগানিস্তানে কল্পনাতীত দ্রুততার সঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে তালেবান। দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনার শর্তানুসারে আফগানিস্তান থেকে দুই দশক পর বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের ডামাডোলের ভেতর গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলো দখল করতে থাকে তালেবান। তারপর কাবুল অভিমুখে অভিযান শুরু করে। তাদের সামনে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী অসহায় আত্মসমর্পণ করে। ক্ষমতার পালাবদলকে ‘রক্তপাতহীন’ রাখতে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি।
এদিকে, আগস্ট মাসের শুরুর দিকে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তালেবানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে অন্তত ৯০ দিন সময় লাগবে। পার্লামেন্টে একই রকম সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব।
তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে আগস্টের মাঝামাঝি সময়েই কাবুলের নিয়স্ত্রণ চলে যায় তালেবানের হাতে।
তালেবানের এই উত্থানের ব্যাপারে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল নিক কার্টার বলেছেন, তালেবানের সক্ষমতার ব্যাপারে সবাই ভুল আন্দাজ করেছিলেন।
জেনারেল নিক বিবিসি’র অ্যানড্রিউ মার শো-তে অংশ নিয়ে বলেন, তালেবানের গতি তাদের মতো পেশাদার বাহিনীকেও হতবাক করে দিয়েছে। আর পরিকল্পনাও স্পষ্ট ছিল না। এমনকি তালেবান সদস্যরাও ভাবতে পারেনি এত দ্রুত পরিস্থিতি বদলে যাবে।
সামরিক গোয়েন্দা তথ্য ভুল ছিল কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে নিক কার্টার বলেন, বিভিন্ন উৎস থেকে গোয়েন্দা তথ্য আসে। সবাই যে শুধু সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভর করে ছিলেন, এমন না।
ব্রিটিশ জেনারেল আরও বলেন, তালেবান কিভাবে দেশ চালাবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এবারের প্রশাসন আগের তুলনায় কম নিপীড়ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই নতুন সরকার ঘোষণা করবে তালেবান। তার মানে বিশ্বের অন্য দেশগুলোকেও এখন তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে মানিয়ে চলার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে— জানান যুক্তরাজ্যের এই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।
পাশাপাশি, তালেবানকে ভিন্নপথে পরিচালিত করার দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জানিয়ে জেনারেল নিক বলেন, আফগানিস্তানকে কার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে তৈরি করতে তালেবানের সহায়তা দরকার। তাদের আচরণে পরিবর্তন আসলে তারা হয়তো সহায়তা পেতে পারে।
অন্যদিকে, এর আগের সপ্তাহেই আফগানিস্তান থেকে সব ব্রিটিশ ও মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে দুই দশকের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের অবসান হয়েছে। তবে, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সারাবাংলা/একেএম