Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন দিতে অনুমতি চেয়েছে বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:২০

ঢাকা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অনুমোদন পেলে কার্যক্রম শুরু হবে।’

বিজ্ঞাপন

চলতি মাসে আরও আড়াই কোটি টিকা আসছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা ১৮ বছর বয়সী নাগরিকদের টিকা দিচ্ছি। আমরা ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এ সংখ্যাটি বিশাল। আমরা যেহেতু সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছি, কাজেই ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদেরও টিকা দেব। তবে এর আগে আমাদের ডব্লিউএইচও’র অনুমোদন নেব। যদিও ২২টি দেশ তাদের ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী নাগরিকদের টিকা দিচ্ছে। তারা এ ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব আইন ও প্রটোকল অনুসরণ করছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভ্যাকসিনের ঘাটতি হবে না। চলতি মাসেই আরও আড়াই কোটি ভ্যাকসিন আসছে। এটি চূড়ান্ত হয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি এখন নিম্মমুখী। ফলে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর কিছ অন্যান্য রোগীদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ১২ থেকে ১৪ হাজারে করোনা সিট খালি। এগুলোতে অন্যান্য রোগী ভরসা করা হবে।’

প্রায় দেড় বছরের অনলাইন শিক্ষার পর স্কুল ও কলেজগুলো ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের। তবে কবে থেকে কর্তৃপক্ষ শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করবে, তা এখনও জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

মাত্র ২২টি দেশে ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অথবা টিকাদান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে শিশুদের ওপর বিভিন্ন ধরনের টিকার ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন বিষয়ক কারিগরি কমিটির সদস্যরা ১২ বছর বয়সী শিশুদের শুধুমাত্র ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

বাংলাদেশ এ পর্যন্ত দুই ডোজের ফাইজার ভ্যাকসিনের মাত্র ১০ লাখ ডোজ পেয়েছে। এই ভ্যাকসিনের পরবর্তী চালানটি দেশে কবে এসে পৌঁছবে, তার কোনো ঠিক নেই। নিম্ন তাপমাত্রায় একে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন থাকায় ফাইজার ভ্যাকসিনটি গ্রামাঞ্চলে দেওয়া জটিল হবে।

গত সপ্তাহে কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ইউনিসেফের মাধ্যমে ২৬টি ফ্রিজার আসায় দেশে এখন ফাইজার ভ্যাকসিনের এক কোটি ডোজ সংরক্ষণের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।

দেশের চলমান গণটিকাদান কর্মসূচি ডোজের স্বল্পতার কারণে বারবার বিঘ্নিত হয়েছে। সরকার যথেষ্ট পরিমাণ ডোজের অভাবে সাত থেকে ১২ আগস্টের বিশেষ গণটিকাদান কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতর ২০ আগস্ট থেকে ১৮ ও তার বেশি বয়সের শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করার অনুমোদন দিয়েছে। বাকিদের জন্য নিবন্ধনের ন্যুনতম বয়স ২৫।

তিনি আরও বলেন, ‘১২ বছর ও তার বেশি বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি নীতিমালা আছে এবং আমরা দেখতে পেয়েছি, বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে শিশুদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করব (অন্য দেশে যেটি অবলম্বন করা হচ্ছে)।’

সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, সান মারিনো, স্পেন, লিথুনিয়া, ইতালি, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও এস্তোনিয়ায় শিশুদের টিকা দেওয়ার অনুমোদন অথবা পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এশিয়ায় চীন, সিঙ্গাপুর, হংকং, জাপান, ফিলিপাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিলিস্তিন, পাকিস্তান ও ভারত এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিকল্প যাচাই করে দেখছে।

যদি বাংলাদেশ ১২ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সের সব শিশুকে টিকা দিতে চায়, তাহলে প্রতিটি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও এই বয়স সীমার মধ্যে পড়ে এরকম অসংখ্য স্কুল ছেড়ে যাওয়া শিশুদের জন্য দুটি করে ডোজের প্রয়োজন পড়বে।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশজুড়ে বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী পড়ছেন।

সরকারের হাতে এখন প্রায় এক কোটি ৭৯ লাখ টিকার ডোজ মজুত আছে, যার বেশিরভাগই সিনোফার্মের ভ্যাকসিন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শুক্রবার জানান, সরকার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের জন্য উপযুক্ত ভ্যাকসিন জোগাড়ের চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য দেশে নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার দেখা দেওয়ায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

নভেল করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর