Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোরকে বাসা ছাড়তে বাধ্য করায় মালিকের বাসায় চুরি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঈদুল আজহার বন্ধে চট্টগ্রাম নগরীতে তিনটি চুরির ঘটনায় জড়িত পেশাদার এক চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ বছর ধরে চট্টগ্রাম শহরে অপরাধে জড়িত ওই যুবক কমপক্ষে সাড়ে তিনশ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। চুরির দায়ে গ্রেফতারের পর মালিক বাসা ছাড়তে বাধ্য করায় ওই মালিকের ঘরে চুরি করে ‘প্রতিশোধ’ নেয় সে।

মঙ্গলবার (০৭ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা এলাকা থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতার মো. বাবলুর (২৮) বাড়ি ফেনী জেলায়। বর্তমানে কর্ণফুলী উপজেলার বোটবাজারে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, ঈদুল আজহার বন্ধে গত ১৮ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে নগরীর পাথরঘাটায় একই ভবনের দুই বাসা থেকে স্বর্ণালংকারসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। ২৭ জুলাই থেকে ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে কোতোয়ালি থানার চুড়িয়ালটুলি লেইনের একটি বাসা থেকে প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল চুরি। তিনটি বাসাই তালাবদ্ধ করে পরিবারের সদস্যরা ঈদের বন্ধে গ্রামে গিয়েছিলেন।

‘তিনটি মামলা তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বাবলুকে শনাক্ত করি। পরবর্তী সময়ে তার অবস্থান চিহ্নিত করে তাকে গত (মঙ্গলবার) রাতে গ্রেফতার করি। গ্রেফতারের পর বাবলু তিন বাসায় চুরির ঘটনা স্বীকার করে এবং তার বাসায় স্বর্ণালংকার ছাড়া বাকি মালামাল মজুদ রেখেছে বলে জানায়। আমরা তার বাসায় তল্লাশি করে বেশকিছু চোরাই মালামাল উদ্ধার করি। এছাড়া বাবলু আরও জানায়, চুরি করা স্বর্ণালংকারগুলো সে কর্ণফুলী এলাকার স্বর্ণের গহনার ব্যবসায়ী উত্তমের কাছে বিক্রি করেছে। আমরা উত্তমকে গ্রেফতার করে কিছু স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছি,’— বলেন ওসি।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাবলু একজন পেশাদার চোর। ২০১৯ সালে একবার কোতোয়ালি থানায় গ্রেফতার হয়েছিল। চলতি বছরের শুরুতেও তাকে আমরা একবার গ্রেফতার করেছিলাম। কিন্তু বারবার জামিনে বেরিয়ে সে একই কাজ করে। বাবলু জানিয়েছে, গত পাঁচ বছর ধরে সে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় চুরি করছে। এ পর্যন্ত সে প্রায় সাড়ে তিনশ বাসায় চুরি করেছে।’

বাবলুকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি আরও বলেন, ‘নালার পাশে যেসব বাসা থাকে সেগুলো বাবলুর টার্গেট। রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কোনো বাসায় বাতি জ্বলে না, সেটা পর্যবেক্ষণ করে। যে বাসায় আলো থাকে না, সেখানে কেউ নেই নিশ্চিত হয়ে পাইপ বেয়ে বা কার্নিশ বেয়ে উঠে জানালার গ্রিল কেটে চুরি করে। বাবলু প্রথমে সদরঘাট এলাকায় থাকত। সেখান থেকে গিয়ে গতবছর কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্যা মাজারগেট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। চুরির দায়ে গ্রেফতারের পর মালিক তার স্ত্রীকে বাসা ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। এই ক্ষোভে জেল থেকে বের হয়ে ঈদুল আজহার আগে ওই মালিকের বাসার ছয়টি জানালা কেটে চুরি করে প্রতিশোধ নেয়।’

গ্রেফতার বাবলু ও উত্তম দে’কে বুধবার দুপুরে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালত বৃহস্পতিবার শুনানির সময় নির্ধারণ করে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলে এসআই মোমিনুল হাসান জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

টপ নিউজ মালিকের বাসায় চুরি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর