চট্টগ্রাম ব্যুরো : নোয়াখালীর ভাসানচরে সরকারি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা শিশুসহ ৯ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে আটক হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মীরসরাই উপজেলার দক্ষিণ মঘাদিয়া সাহেরখালী এলাকায় তাদের দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভাসানচর ক্যাম্প থেকে গোপনে বেরিয়ে ট্রলারে করে তারা কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। পথে তাদের মীরসরাইয়ের সাহেরখালী এলাকায় সাগরতীরে নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে স্থানীয়রা তাদের দেখে পুলিশকে খবর দেয়। আমরা গিয়ে তাদের আটক করে আবারও ভাসানচরে পাঠিয়েছি। নোয়াখালী জেলা পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
আটক নয়জনের মধ্যে দুই জন পুরুষ, চার জন নারী ও তিন জন শিশু বলে জানিয়েছেন ওসি মুজিবুর রহমান।
এর আগে, বুধবার সীতাকুন্ড উপজেলার উত্তর সলিমপুর থেকে ১৯ রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। তারাও ভাসানচর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। এছাড়া মীরসরাই এবং সন্দ্বীপে কয়েক দফায় এ পর্যন্ত কয়েক’শ রোহিঙ্গা আটক হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট রাতে নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে ৪০ জন রোহিঙ্গা নিয়ে সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে যায়। তাদের মধ্যে ১৪ জন রোহিঙ্গা জেলেদের নৌকায় করে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফিরে যায়। এরপর বেশ কয়েকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবানের তমব্রু সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা প্রবেশ শুরু করেন। সেসময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার হয়ে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। গত তিন দশকে আসা নতুন-পুরনো মিলিয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বসবাস।
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ দিতে নৌবাহিনী নোয়াখালীর ভাসানচর দ্বীপে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে। সেখানে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, খেলার মাঠ, হাসপাতালসহ প্রায় এক লাখ মানুষের নিরাপদে থাকার সব ব্যবস্থা আছে বলে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
এ অবস্থায় গত বছরের (২০২০) ৪ ডিসেম্বর থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়া শুরু হয়। কয়েক দফায় ১৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরে গিয়েছিলেন। তবে এর মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে ভাসানচর থেকে ফের কক্সবাজারে পৌঁছেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।