Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাটের বাম্পার ফলন, দামও ভালো— লাভের আশায় ভৈরবের কৃষকরা

এম এ হালিম, লোকাল করেসপন্ডেন্ট
১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৩৩

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): ভৈরবে পাটের বাম্পার ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় খুশি স্থানীয় চাষীরা। তবে সরকার যেন পাটের দাম আরও বাড়িয়ে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে— এমনটিই দাবি পাট চাষিদের। তারা বলছেন, ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম মিললে তবেই পাটের আবাদ আরও বাড়বে। আর এর মাধ্যমেই পাট তার সোনালি অতীত ফিরে পাবে।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে ভৈরবে ২৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। কৃষকরা পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আঁশ ছড়ানো ও রোদে শুকানোর কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এর আগে, ভৈরবে গত বছর পাট চাষ করে ভালো দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েন অনেক চাষি। তবে এ বছর স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনার বিনামূল্যে পাট বীজ, পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়েছেন তারা। এর সঙ্গে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের আবাদে রোগবালাই বা পোকার আক্রমণ খুব একটা দেখা যায়নি। তাতে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষকরা জানান, গত বছর পাট ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। তাতে লাভ তো দূরের কথা, লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের। তবে এ বছর বাজারে দেশি পাট প্রতি মণ ৩ হাজার ৮শ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় এবং কেনা ও মেস্তা পাট ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকা মণ দরে দাম পাচ্ছেন। ফলে গত বছরের লোকসান কাটিয়ে এ বছর কিছুটা লাভ হবে বলে আশা করছেন তারা। কৃষকদের দাবি, সরকার যেন আবাদের খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পাটের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দেয়।

পাট চাষী ইদু মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর পাট চাষ করে দাম ভালো না থাকায় লোকসান গুনতে হয়েছে। কিন্তু এ বছর ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ফলন ভালো পেয়েছি। বাজারে দামও পাচ্ছি প্রতি মণ ৩ হাজার ৮শ টাকা দরে।’ তাতে হাসি ফুটেছে ইদু মিয়ার মুখে। আগামীতে আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

জয়নাল আবেদীন ও ছিদ্দিক মিয়া জানান, পাট চাষে প্রতি কানিতে ৭/৮ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে প্রায় ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন পাট। তাই একটু লাভ হবে বলে তারা ও খুশি। তবে তাদের দাবি, সরকার যেন পাটের ন্যায্য মূল্য ধরে রাখে। তাহলে এ অঞ্চলে পাটের আবাদ আরও বাড়বে।

একই রকম কথা বলছেন কৃষক আবদুল্লাহ, ফয়সাল, রাহিম ও মনির মিয়াও। তারা বলেন, গত বছর দুই হাজার টাকা থেকে ২২শ টাকা দরে পাট বিক্রি করতে হয়েছিল তাদের। তাতে লোকসান গুনতে হয়েছে। তাই এ বছর পাট চাষের আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছিলেন। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শ, উৎসাহ ও বিনামূল্যের বীজ পেয়ে তারা পাট চাষ করেছেন। এখন বাজারমূল্য ভালো থাকায় লাভবান হবেন বলেই আশা করছেন।

পাটের আবাদে কৃষকদের উৎসাহ দিতে স্থানীয় কৃষি অফিস বড় ভূমিকা রেখেছে বলে জানালেন ভৈরবের উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা চন্দন কুমার সূত্রধর। তিনি বলেন, গত বছর লোকসান গুনতে হওয়ায় কৃষকদের অনেকেই এ বছর পাট চাষ করতে চাননি। তবে আমরা পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে পাটের বীজ বিতরণ করেছি। একইসঙ্গে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়েছি, যথাসম্ভব সহযোগিতা করেছি। পোকামাকড়ের প্রকোপ এ বছর তেমন না থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে এবার কৃষকরা আরও লাভবান হবেন।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, চলতি মৌসুমে ভৈরবে ২৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারেও দর ভালো। ফলে কৃষকরা লাভবান হবেন এবং আরও বেশি পাটের আবাদ করতে আগ্রহী হবেন।

সারাবাংলা/টিআর

কিশোরগঞ্জ কৃষকরা পাট


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর