এবার তালেবানের পক্ষে নারীদের সমাবেশ
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:২৬
গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে চোখমুখ ঢাকা বোরখা পরা, আলাদা শ্রেণিকক্ষ ও নারী শিক্ষকের দ্বারা পাঠদানের নির্দেশনা জারি করে তালেবান সরকার। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। এবার তালেবানের এই নীতির সমর্থনে এগিয়ে এলেন একদল পর্দানশীন নারী। পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা এই নারীরা হাতে আফগানিস্তানের পতাকা নিয়ে তালেবানের নীতির প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেন। এসময় মেশিনগান ও রাইফেন হাতে তালেবান যোদ্ধারা তাদের পাহারায় ছিল। এএফপি।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটারে তালেবানের অন্তত ৩০০ আফগান নারী সমাবেশে অংশ নেন। এসময় তারা লিঙ্গ শ্রেণিভেদের বিষয়ে তালেবান সরকারের কট্টরনীতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেন।
সমাবেশে অংশ নেওয়া নারীদের মধ্যে বেশিরভাগই মুখ ঢাকা কালো বোরখা পরেছিলেন, যার চোখের সামনে শুধু একটুকরো জালের পর্দা থাকে। তবে কয়েকজনের চোখ খোলা থাকলেও পরেছিলেন কালো রঙের হাত মোজা। অল্প কিছু নারীর পরনে ছিল নীল বোরখা।
এর আগে আফগানিস্তানে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে নারী অধিকার ছিল কার্যত রহিত। ২০০১ সালে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর সেদেশে গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে নারী অধিকার গুরুত্ব পায়। কিন্তু দুই দশকে বছর পর আবারও ক্ষমতায় আসা তালেবান নারীদের বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও তাদের গৃহীত নানা নীতিতে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। গত ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পরপরই মেয়েদের শিক্ষা, চাকরি, খেলাধুলাসহ নানা ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করেছে তালেবান। নবগঠিত ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রিসভায়ও জায়গা হয়নি কোনো নারীর। এ ব্যাপারে সম্প্রতি তালেবান বলেছে, মেয়েদের কাজ মা হওয়া, মন্ত্রী হওয়া নয়।
এদিকে ওই সমাবেশে অল্পবয়সী মেয়ে থেকে শুরু করে শিশুসহ বেশ কিছু নারীদের দেখা গেছে। এসব শিশুরা সমাবেশের মধ্যেই কান্নাকাটি করছিল। তবে তালেবানের সমর্থনে সমাবেশে আসা এসব নারীদের ছাত্রী হিসেবে দাবি করেছে তালেবান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক পরিচালক দাউদ হাক্কানি বলেন, বিক্ষোভের জন্য আগে থেকে অনুমতি চেয়েছিল এই নারীরা।
এই সমাবেশ থেকে তালেবান সরকারের কঠোর নারী নীতির প্রতি শুধু সমর্থনই জানানো হয়েছে তা নয়, দেশটিতে তালেবানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী নারীদেরও সমালোচনা করা হয়। শুধু তাই নয়, তারা পূর্ববর্তী সরকারেররও সমালোচনা করে যখন নারীরা অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করত। তাদের মতে, পূর্ববর্তী সরকার নারীদের অপব্যবহার করত। তারা নারীদের নিয়োগ করত শুধুমাত্র তাদের সৌন্দর্যের জন্য।
বর্তমান তালেবান সরকারের গৃহীত কঠোর নীতির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানোর পাশাপাশি তারা সর্বশক্তি দিয়ে তাদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে সমাবেশ শেষ করেন।
সারাবাংলা/আরএফ/আইই