Tuesday 22 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জরুরি চিকিৎসা দিতে অসম্মতি জানাতে পারবে না হাসপাতাল: হাইকোর্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৫৩ | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৫৬
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে কোনো হাসপাতাল অসম্মতি জানাতে পারবে না বলে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অসুস্থ ব্যক্তিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

এছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের নতুন লাইসেন্স ইস্যু করার সময় এবং বিদ্যমান রেজিস্টার্ড হাসপাতাল বা ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন করার সময় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান বিভাগ আবশ্যিকভাবে থাকতে হবে— এমন শর্ত যুক্ত করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি হেলথ), বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশনা ইমাম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শামীমা আক্তার ও খন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

আদালত আদেশে বলেন, কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে যখনই হাসপাতাল বা ক্লিনিক অথবা চিকিৎসকদের কাছে নেওয়া হবে, ওই অসুস্থ ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই অসম্মতি জানাতে পারবে না।

আদেশে বলা হয়, যদি কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এরকম জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে জরুরি সেবা রয়েছে— এমন নিকটস্থ কোনো হাসপাতালে ওই ব্যক্তিকে পাঠাতে হবে। এছাড়া সব বেসরকারি-সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তালিকা, জরুরি চিকিৎসাসেবা বিভাগ রয়েছে— এমন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পৃথক তালিকা এবং সেসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বর্তমান অবস্থার বিস্তারিত বিবরণসহ একটি তালিকা আগামী তিন মাসের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী রাশনা ইমাম সারাবাংলাকে বলেন, হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশের ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুমূর্ষু রোগীকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে বাধ্য থাকবে। কারণ আদালত বলেছেন, কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে যেকোনো মুহূর্তে যখনই হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেওয়া হবে, তাৎক্ষণিকভাবে তাকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার বিষয়ে হাসপাতাল বা ক্লিনিক অসম্মতি জানাতে পারবে না। তবে ওই হাসপাতালে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকলে রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠাতে হবে।

রাশনা ইমাম বলেন, আদালত আরও একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি হলো— হাসপাতাল ও ক্লিনিকের জরুরি সেবা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে। দেশে যত বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক আছে, এই প্রতিবেদনে সেই তালিকা থাকতে হবে। পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসাসেবা বিভাগ রয়েছে— এমন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের একটি পৃথক তালিকা এবং ওইসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ এই প্রতিবেদনে উল্লেখ রাখতে বলা হয়েছে।

আগামী বছরের (২০২২ সাল) ১৮ জানুয়ারি মামলাটির পরবর্তী আদেশের জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে বলেও জানান আইনজীবী রাশনা ইমাম।

হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে জরুরি চিকিৎসাসেবা না পাওয়া এ রকম কয়েকটি ঘটনার প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও একাডেমি অব ল অ্যান্ড পলিসি (আলাপ) একটি রিট দায়ের করেছিল। এই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ (রোববার) এসব নির্দেশনা দিয়েছেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

মুমূর্ষু রোগী হাইকোর্ট হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসাসেবা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর