ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ শেষে দেশের গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে পৌঁছেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সড়কে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। নিরাপদ সড়কের কথা বলা হলেও সড়কে নৈরাজ্যই দেখছি।
সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেক হক বলেন, সড়ক পরিবহনের নতুন আইনটিকে মালিকদের স্বার্থে ব্যবহার হচ্ছে। আইন বলছে একরকম, ট্রাফিক ব্যবস্থা চলছে অন্যরকম। রাস্তায় কয়েকদিন স্বচ্ছ ট্রাফিক বক্স দেখেছি, কিন্তু কয়দিন যেতে না যেতেই তা ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সড়কে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে। নতুন সড়ক পরিবহন আইন হয়েছে কিন্তু তা কার্যকর হতে দেখছি না। এ আইনে লাইসেন্স পারমিটের জন্য দুই হাজার টাকার বদলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। তাহলে কী আমরা ঘুষের টাকা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করেছি? মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থে কাঁটছাট করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মানবিক গণপরিবহন গড়ে তুলতে না পারলে মেট্রোরেল ও পদ্মাসেতুর মতো উন্নয়ন দৃশ্যমান হবে না।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা পরিষিদের সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, বিশ্বের আর কোন দেশে চেকপোস্ট বসিয়ে পরিবহন মালিকরা টাকা আদায় করে? কিন্তু বাংলাদেশে তা সম্ভব। সরকার আন্তরিক হলে পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের অধিকার আদায় করা সম্ভব। শুধুমাত্র সরকার চায় না বলেই সড়কে নৈরাজ্য থেকেই যাচ্ছে।
গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, সড়কে দুর্ঘটনা, অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের প্রতীকী দিবস হিসাবে দেশে তৃতীয়বারের মতো যাত্রী অধিকার দিবস পালন করা হচ্ছে। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ চাই।