নেপালের জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:২০
ঢাকা: নেপালে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে চায় বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির তৃতীয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। নেপালে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিপুল সম্ভাবনা এবং উভয় দেশের বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এই সম্ভাবনা কীভাবে কাজে লাগানো যায়- সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) উভয় দেশের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সভায় দু’দেশের বিদ্যুৎ খাতে অধিকতর সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান এবং নেপালের পক্ষে বিদ্যুৎ, পানি সম্পদ ও সেচ সচিব দেবেন্দ্র কার্কি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
ভার্চুয়াল বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে ঋতু ভেদে বিদ্যুৎ চাহিদার তারতম্যের আলোকে পারস্পরিক বিদ্যুৎ বাণিজ্যের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি দুদেশের বিদ্যুৎখাতে অধিকতর সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
উল্লেখ্য, নেপাল সরকার সেদেশে সম্ভাব্য পাঁচটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। তার কোনটিতে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে সে বিষয়ে নেপালের চলমান সমীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সভায় জানানো হয়, নেপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্থায়ন ও যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্য প্রকল্প চিহ্নিত করা, উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানির পন্থা নির্ধারণ এবং আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সম্ভব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিমের জেনারেশন ও ট্রান্সমিশন গ্রুপ কাজ করছে।
তবে সঞ্চালন লাইনের অংশ বিশেষ ভারতের ভূখণ্ডে নির্মিত হবে। এতে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নির্ধারণ হবে বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়। এ সময় ভারতের বর্তমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রফতানির প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
ভারতের জিএমআর গ্রুপ নেপালে ৯০০ মেগাওয়াট আপার কার্নালি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। সেখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির অগ্রগতির বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, জিএমআর এবং এনভিভিএন’র মধ্যে সইয়ের অপেক্ষায় থাকা এ সংক্রান্ত চুক্তিটি চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সভায় বাংলাদেশ ও নেপালে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। সভায় বাংলাদেশের সোলার হোম সিস্টেম কার্যক্রম ও নেট মিটারিং কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়। এবিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের স্রেডা (SREDA) এবং নেপালের অলটারনেটিভ এনার্জি প্রমোশন সেন্টারের (Alternative Energy Promotion Centre) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়েও আলোচনা হয়।
জেএসসি সভায় বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে উভয় দেশ সম্মতি প্রকাশ করে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিপিএমআই’র প্রশিক্ষণ সক্ষমতার বিবরণ তুলে ধরা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ ও জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় সভা ২০১৯ সালের জুনে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর কমিটির চতুর্থ সভা ২০২২ সালের মার্চ/এপ্রিলে নেপালে অনুঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম