প্রণোদনা টাকা ১৮টির বদলে ৩৬ কিস্তিতে শোধ করতে চায় বিজিএমইএ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৪৫
ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে এবং শিল্প খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ ক্ষেত্রে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় যে ঋণ পোশাক কারখানাগুলো নিয়েছিল, সেই ঋণ ১৮টির পরিবর্তে ৩৬টি কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচির নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠকে এ অনুরোধ জানান। সভায় বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সহসভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম ও পরিচালক এম. এহসানুল হক উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ নেতারা বলেন, দেশে কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে পোশাক শিল্পের কঠিন সময় দীর্ঘায়িত হয়েছে এবং শিল্প এখনো কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ইউরোপসহ বাংলাদেশের প্রধান রফতানি বাজারগুলো এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি।
তারা আরও বলেন, আশা করা হয়েছিল যে মহামারি পরিস্থিতির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে সমর্থ হবে। কিন্তু নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ও সংক্রমণ শিল্পকে আবার নতুন করে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে।
এই সংকটময় সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য ঋণ পরিশোধের কিস্তির সংখ্যা ১৮টি’র পরিবর্তে ৩৬টি করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বিজিএমইএ নেতারা অর্থ সচিবকে অনুরোধ জানান। তারা সরকারকে রুগ্ন/বন্ধ ১৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানাকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ঋণ ও আয় খাতে নিট সুদ অবসায়নের জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
যেসব উদ্যোক্তারা নিরাপদে ব্যবসা বন্ধ করতে চান, তাদের জন্য ‘চ্যাপ্টার ১১’-এর মতো ব্যবসা থেকে প্রস্থান নীতি প্রণয়নের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন বিজিএমইএ নেতারা। তারা বলেন, আমাদের অধিকাংশ প্রতিযোগী দেশগুলোতে ‘চ্যাপ্টার ১১’-এর মতো ব্যবসা থেকে সম্মানজনক প্রস্থান নীতি রয়েছে।
তারা আরও বলেন, কোনো গ্রুপ অব কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হলে অন্যান্য প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের ঋণপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্যবসা পরিচালনা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাংক ঋণ সুবিধার অভাবে নিয়মিত ভালো প্রতিষ্ঠানও পর্যায়ক্রমে খেলাপি হতে বাধ্য হয় এবং তাদের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করার কোনো সুযোগ থাকে না।
বিজিএমইএ প্রতিনিধি দল সরকারকে কোনো ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপের যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চলমান ঋণ ও ব্যাংক সুবিধা বন্ধ না করে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর