জবির নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে ‘আন্দোলন’, ভিসি কক্ষের সামনে বিশৃঙ্খলা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০০:৫৩
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাস নিজস্ব তত্ত্বাবধানে করার দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতাসহ কিছু ছাত্রলীগকর্মী। এসময় তারা উপাচার্যের কক্ষের সামনে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়। সামনে থাকা গাছের একটি টবও ভেঙে ফেলা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির একপর্যায়ে ‘আন্দোলনকারীরা’ প্রক্টরিয়াল বডির নামেও স্লোগান দিতে থাকেন। পরে পরিস্থিতি আরও অশান্ত ও বিশৃঙ্খল হয়ে গেলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ যেন নিজস্ব তত্ত্বাবধানে করা হয়, সে দাবিতে ছাত্রলীগের ২০১৯ সালের সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম টিটোন ও কয়েকজন যুগ্ম আহ্বায়কসহ কিছু কর্মী উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় তাদের থামাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির একজন শিক্ষকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক জবি শিক্ষক বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ যারা আন্দোলন করছেন, তারা ভালো একটি বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছেন। কিন্তু এর পেছনে কিছু রয়েছে কি না, সেটিও দেখতে হবে। তারা হয়তো মনে করছেন, নতুন উপাচার্যকে ধমক দিয়ে কিছু আদায় করা যায় কি না। তবে উপাচার্য স্যার তেমন কেউ নন যে তাকে ধমক দিলেই কাজ হবে। তাদের বারবার তাদের দাবির বিষয়গুলো লিখিত আকারে দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা দেননি। ফলে তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতেও পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর বলেন, তাদের দাবিগুলো ভালো। কিন্তু আন্দোলনের পদ্ধতি মোটেও ভালো ছিল না। তারা আরও গুছিয়ে উপাচার্য স্যারের কাছে দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে পারতেন। কিন্তু তারা যে স্লোগান-ভাঙচুরে যে পরিবেশ তৈরি করেছেন, সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে বরং তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়েছে। তাদের আন্দোলনের পেছনে অন্য কিছু আছে কি না, সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জবি ছাত্রলীগের ২০১৯ সালের সম্মেলন কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য দুই বছরের সময় পেরিয়ে চার বছর হয়ে গেলেও এখনো মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে পারেনি প্রশাসন। তবে এখন তারা মাস্টারপ্ল্যানসহ সব কাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে চায়। এতে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজটি হয়তো গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা প্রকৌশল দফতর পেতে পারে। সেক্ষেত্রে এটি দীর্ঘসূত্রিতায় আক্রান্ত হবে। তাই আমাদের দাবি ছিল যেন বিশ্ববিদ্যালয় নিজ তত্ত্বাবধানে কাজটি করে।
বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি বা ফুলের টব ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, স্লোগান দেওয়ার সময় হয়তো কারও সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে ভেঙে যেতে পারে। আমাদের কেউ এমন করেনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কাজের বিষয়ে বা উপাচার্য স্যারের কাছে কোনো দাবি থাকলে সেটি লিখিতভাবে জানানোর জন্য উপাচার্য স্যার বারবার বলেছেন। আজও তিনি একই কথা বলেছেন। কিন্তু তারা কোনো ধরনের লিখিত দাবি জানায়নি।
সারাবাংলা/টিআর