‘মাসে এক কোটি ডোজের বেশি ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:০৬
ঢাকা: প্রতি মাসে যেন এক কোটি ডোজের বেশি ভ্যাকসিন পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্ব উত্থাপিত হয়। পিরোজপুর-৩ আসনের এমপি রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিনোফার্মের সিডিউল অনুযায়ী আগামী অক্টোবর মাস থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসেবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। চলমান ভ্যাকসিন কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ইতোমধ্যে সকল বিভাগীয় সদর, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে অবস্থিত ৬৭৩টি ভ্যাকসিনের কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্র ইউনিয়ন পর্যায়ে বিস্তৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় জনবলকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশা করি পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে ।
তিনি বলেন ,করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও ব্যবহারের অনুমতিপ্রাপ্তির আগে থেকেই আমরা ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা ও সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার দেশের সকল মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে ন্যাশনাল ডেপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ভ্যাকসিনেশন প্ল্যান (এনডিভিপি) প্রস্তুত করেছে যা কোভ্যাক্স কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রমান্বয়ে দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে জনসাধারণের জন্য ভ্যাকসিন গ্রহণের বয়সসীমা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে দেশে ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
সংসদ নেতা বলেন, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে এখন পর্যন্ত চব্বিশ কোটি পঁয়ষট্টি লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তি এবং উপহার হিসেবে মোট চার কোটি চুয়াল্লিশ লাখ একত্রিশ হাজার আটশ আশি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে ।
তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তির আওতায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি এবং চীনের সিনেফার্ম ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে সাত কোটি সত্তর লাখ ডোজ ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি সই করা হয়েছে। এছাড়া রাশিয়া থেকে এক কোটি ডোজ স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া কোভ্যাক্সের মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ সিনোফার্ম ও সাত কোটি পঞ্চাশ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামের ক্ষেত্রে প্রতি ২০ জনের মধ্যে ১১ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হলে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে উঠে। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে এ সংখ্যা নির্ধারণ করা যায়নি, যা এখনও গবেষণাধীন রয়েছে। বর্তমানে ১৮ বছরের ওপরে সকল বাংলাদেশি নাগরিককে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং সে অনুযায়ী বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মজুদ ভ্যাকসিনের পরিমাণ ছিয়ানব্বই লাখ চুয়ান্ন হাজার একশ উনিশ ডোজ ।আমরা আশা করি সকলের সহযোগিতায় চলমান এই বৈশ্বিক মহামারিকে সফলভাবে মোকাবিলা করা সক্ষম হবে। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এ জন্য ভ্যাকসিন গ্রহণের পাশাপাশি সবাইকে নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে ।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এসএসএ