‘নদ-নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ আবাসিক প্লট বিরাট বোঝা’
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:২৫
ঢাকা: দিনের পর দিন নদ-নদীর তীরে দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনাকে ‘বিরাট বোঝা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে নদ-নদীর তীর দখল করে আবাসিক-অনাবাসিক ভবনসহ নানা ধরনের শিল্প কারখানাও গড়ে উঠেছে। গত কয়েক বছর ধরে সরকার এসব স্থাপনা উচ্ছেদের আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এই উচ্ছেদে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আবাসিক প্লট।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নদ-নদীর দূষণ কমানোর পাশাপাশি নাব্য রক্ষা করা আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত ছিল। সে অনুযায়ী সরকার কাজ করছে। এরই মধ্যে নদ-নদীর তীরে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদ-নদী তীরে অবৈধভাবে অনেক ছোট-বড় অনেক শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানা চাইলেই সহজে সরানো যাচ্ছে না। কারণ সেগুলোতে অনেক বিনিয়োগ রয়েছে। দেশের মানুষ তো ভাবেনি যে নদীর নিজস্ব জায়গা আছে। এই ভাবনা তৈরির কাজ রাষ্ট্র এর আগে কখনো করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালে নদ-নদীর দূষণ দূর করতে উদ্যোগ নেন।
তিনি আরও বলেন, একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে অনেক বিনিয়োগ থাকে। এখনই বন্ধ করলে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। তার মানে এই না যে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। আমরা সীমানা পিলার বসিয়ে দিয়ে বলেছি, ভবিষ্যতে তাদের সরে যেতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে সরেও গেছে। আমরা যেখানে পিলার দিচ্ছি সেখানে আপস করিনি। অনেক পিলার ভবনের মধ্যেও দিতে হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক রুগ্ন কারখানা ছিল। এগুলো লাভজনক করার জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা কারখানা ভেঙে আবাসিক প্লট বানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। তারপর সেগুলো অনেক হাত বদল হয়েছে। এগুলো এখন আমাদের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, যিনি প্লট কিনে সেখানে বাড়ি বানিয়েছেন, তাকে সরাব কী করে? তিনি তো তার সব সঞ্চয় দিয়ে ওই বাড়িটুকুই করেছেন।
এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের থাকলেও রাষ্ট্র সেটি সঠিকভাবে করেনি অভিযোগ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র সেটি করেনি বলেই এখন এসব আবাসিক প্লট বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমরা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না করে এর সমাধান করার চেষ্টা করেছি। আমরা কারও সঙ্গে আপস করিনি। আমরা এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছি। শুধু নদ-নদী দখলই নয়, সব অন্যায়ের ক্ষেত্রেই এই নীতি রয়েছে। কিন্তু দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর