Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংবাদ পরিবেশনে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ নৌ-প্রতিমন্ত্রীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:০৫

ঢাকা: নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুতে ফেরির ধাক্কা লাগা নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ফেরির ধাক্কায় পদ্মাসেতুর পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- এমন নিউজ দ্রুত পরিবেশন করায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে দোষীর কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আসলে সেদিন পিলারে ধাক্কাই লাগেনি।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ওই সংবাদকর্মীকে আরও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। দ্রুত নিউজটা ছেড়ে দিয়ে সমগ্র দেশবাসীকে একটা আতঙ্কের মধ্যে রাখা ঠিক হয়নি। ওই সাংবাদিক একটু বিশ্লেষণ করলে বুঝতে পারতেন ওদিন ধাক্কা লাগেনি। কয়েক ঘণ্টা পর যখন সেতু কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রী গেলেন তখন দেখলেন, সেখানে কোনো ধাক্কা লাগেনি। আমি সাংবাদিকদের বলেছিলাম ধাক্কা লাগলে ভেঙে যাবে বা দাগ লাগবে। কিন্তু লাইটেও ক্ষতি হয়নি, সেতুতে কোনো দাগ লাগেনি। ওইদিনের বিষয়টি নিয়ে দেশবাসী বিভ্রান্ত হয়েছে এবং আমরাও বিব্রত।’

তিনি বলেন, ‘এই নিউজ দেওয়ার পর আমি বলেছিলাম, ধাক্কাটা এতদিন পদ্মাসেতুতে দেওয়া হয়ছিল, এখন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হচ্ছে। এখানে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে সেতু কর্তৃপক্ষ বলেছে, কী পরিমাণ ধাক্কা লাগলে সেতুর ক্ষতি হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ কী ধরনের অনুভূতি নিয়ে পদ্মাসেতুর দিকে তাকিয়ে আছে এই ঘটনাগুলোর পর বুঝতে পেরেছি।’

পদ্মাসেতুর নিরাপত্তার জন্য যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়ে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কষ্ট, বঞ্চনা সহ্য করে এই পদ্মাসেতু করার যে সাহস দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তার জন্যই আজ সেতু দৃশ্যমান।’

বিজ্ঞাপন

মাওয়া ঘাটে কবে থেকে ফেরি চালু হবে এবং পদ্মাসেতুতে ফেরির ধাক্কা বিষয়ে তদন্ত কমিটি কী পেল?- এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ৪ নটিক্যাল মাইলের নিচে পানির স্রোত আসছে কি না সেটা আমি জানি না। তবে অনেকেই বলেছেন, এতদিন ধাক্কা লাগেনি, এখন ধাক্কা লাগে কেন। এতদিন কিন্তু একটি নির্দিষ্ট পকেট দিয়ে ফেরি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা ছিল না। এত দিন দায়িত্ব ছিল বিআইডব্লিউটিএ’র। আর এখন দায়িত্ব পদ্মাসেতু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর আমরা ফেরি চালিয়েছি ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ফাঁক দিয়ে। কিন্তু এখন সেখানে বাধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতবছর এই সেতুতে স্প্যান বসানো ছিল না। উন্মুক্ত ছিলো। এখন সুনির্দিষ্ট পকেট দিয়ে চলতে হয়। আমাদের মাস্টারদের সে অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের যে নির্দেশনা ছিল মাস্টাররা সেটা অনুসরণ করেনি। আর করেনি বলেই ধাক্কা লেগেছে। আমরা কিন্তু তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু সর্বশেষে যে ঘটনাটা ঘটে গেল, সেখানে সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, ধাক্কা লাগেনি। মাস্তুল না সিগন্যাল লাইট যখন নামিয়ে দেওয়া হয় তখন ভিডিওটা ধারণ করা হয়েছে।’

মাওয়াঘাটে ফেরি চলাচলের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাওয়াঘাটে ফেরি প্রায় এক মাসের মতো বন্ধ আছে। সেজন্য আমরা দৌলদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি অনেক বৃদ্ধি করেছি। সেখানে কোনো জট নেই। কারণ রাস্তায় চার লেনের কাজ চলছে। আমরা হরিণাতে সাতটি ফেরি বৃদ্ধি করেছি। দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ঘাটটি ভেঙে গেছে। তারপরও চলাচল অব্যাহত রেখেছি। মাওয়া থেকে বাংলাবাজার যেতে দেড় ঘণ্টা লাগে। আর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া যেতে লাগে ২৫ মিনিট। রাস্তার হিসাব করলে পাটুরিয়া দিয়ে যেতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট সময় বেশি লাগে। তবে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। মাওয়াতে যে লোড ছিল, তার পুরোটা দৌলতদিয়াতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাতে দৌলদিয়াতে যে পরিমাণ চাপ বাড়ার কথা ছিল সেটা কিন্তু হয়নি।’

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

পরামর্শ সতর্ক সংবাদ পরিবেশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর