Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বসুন্ধরা স্টিলের সাড়ে ৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১০:২৬

ঢাকা: পাইপ উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ডট্রেড গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত বসুন্ধরা স্টিল কমপ্লেক্স লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্ত করে প্রায় ৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা।

বুধবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন থাকলেও ২০১৫ সালের আগস্টে বিল্ডট্রেড গ্রুপ মালিকানা স্বত্ত্ব কিনে নেয়। প্রতিষ্ঠানটির ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে এই ভ্যাট ফাঁকি পাওয়া গিয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির দাখিলকৃত সি.এ ফার্ম কর্তৃক প্রদত্ত বার্ষিক অডিট প্রতিবেদন, মাসিক দাখিলপত্র এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি/ অন্যান্য দলিলাদি হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আড়াআড়ি যাচাই/ পর্যালোচনা করে মামলার প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির আমদানিকৃত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে এসআরও সুবিধায় আমদানি করে পণ্যের আকার ও আকৃতি পরিবর্তন না করে অধিকাংশ পণ্য অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে বাণিজ্যিক ব্যবসায়ী হিসাবে বিক্রি করে দিয়েছে। আমদানিকৃত পণ্য আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল নয়।এ ক্ষেত্রেও এসআরও সূবিধার অপব্যবহারের ফলে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট বাবদ ১,৮৫,৩৫,৪১৫ টাকা, কাস্টম ডিউটি বাবদ ৯৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৪ টাকা টাকা এবং আরডি বাবদ ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬১ টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা গিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ায় বার্ষিক অডিট রিপোর্ট তৈরি করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর ব্যতিত তদন্ত মেয়াদের পরবর্তী সময়ের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট দেখাতে পারেনি এবং তারা আয়কর অফিসেও বার্ষিক অডিট রিপোর্ট দাখিল করেনি।

অপরদিকে তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে সিএ ফার্ম কর্তৃক প্রণীত অডিট রিপোর্ট অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি উৎসে কোন ভ্যাট কর্তন করেনি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির এ খাতে প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ পাওয়া যায় ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ টাকা।এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি উৎস খাতে কোন ভ্যাট পরিশোধ না করায় ভ্যাট ফাঁকি বাবদ ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ টাকা উদঘাটন করা হয়। উৎসে খাতে এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ৪৬ লাখ ২২ হাজার ৮৬৭ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য।

এছাড়া তদন্ত মেয়াদে প্রদেয় ও চলতি হিসাবের পার্থক্য, বিভিন্ন উপকরণে অতিরিক্ত ব্যবহারের উপর রেয়াত কর্তন, ৭.৫০% মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পরও মূল্য ঘোষণা না দিয়ে রেয়াত গ্রহণ, নির্ধারিত সময়ের পর অবৈধ রেয়াত গ্রহণ, মূল্যভিত্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নেই এমন পণ্যের উপর রেয়াত গ্রহণ সংক্রান্ত অনিয়ম পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে উপরোল্লিখিত খাতসমূহে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ২ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৮৫ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ৬৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯২২ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য।

তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট পরিহারকৃত ভ্যাট (এটিভি সহ) ৫ কোটি ৩২ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৭ টাকা, সুদ বাবদ ২ কোটি ১৬ লাখ ৬২ হাজার ৮৯৭ টাকা, সিডিঃ ৯৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৪ টাকা, আরডিঃ ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬১ টাকাসহ সর্বমোট ৮ কোটি ৪৮ লাখ ৫ হাজার ৬৮৯ টাকা পরিহারের তথ্য উদঘাটিত হয়েছে বলে ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে।

সারাবাংলা/এসজে/এসএসএ

সাড়ে ৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কোস্ট গার্ডের নতুন ডিজি জিয়াউল হক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩২

সম্পর্কিত খবর