সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব কেন, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৫৭
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার যে কারও ব্যাংক হিসাব তলব করতে পারে। এমপিদেরও ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়, রাজনীতিবিদদের তলব করা হয়, ব্যবসায়ীদের তলব করা হয়। কিন্তু সাংবাদিক নেতাদের বেলায় কেন করা হলো, সেটি আমার কাছে একটি বড় প্রশ্ন। আমি মনে করি, এতে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। কেননা যাদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের আমি চিনি এবং জানি।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ (ডিইউজে) অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবের খবরটি আমি পত্রিকায় দেখেছি। আমিও খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি কেন এটি হলো?’
সাংবাদিকদের সমস্যার কথা ধৈর্য সহকারে শোনার প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে যেমন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে হচ্ছে তেমনি আমি আপনাদেরও প্রতিনিধি। দুই জায়গারই প্রতিনিধি আমি। সুতরাং আপনাদের স্বার্থটা দেখা আমার দায়িত্ব বলে মনে করি।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের আইন ভারতে আছে। এ ধরনের আইন পাকিস্তানে আছে। যে ধারাগুলো নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়, সেই একই ধরনের ধারা ভারতের আইনে এবং পাকিস্তানের আইনে আছে। এর চেয়ে কঠিন ধারা অস্ট্রেলিয়ার আইনে আছে, এর চেয়ে কঠিন ধারা সিঙ্গাপুরের আইনে আছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ফ্রেম অব ল’তে আছে সেটার আলোকে ফ্রান্সে-জার্মানিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে একই ধরনের আইন করা হয়েছে। কারণ আগে তো ডিজিটাল বিষয়টা ছিল না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘একজন সাংবাদিকের চরিত্র হরণ করা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা ডিজিটাল মাধ্যমে তাহলে ভুক্তভোগী কোন আইনে প্রতিকার পাবেন? একজন গৃহিণীর চরিত্র হরণ করা হলে; তার বিরুদ্ধে যদি অহেতুক লেখা হয়, তাহলে তিনি কোন আইনে প্রতিকার পাবেন? সে জন্য তো একটি আইন দরকার।’
আরও পড়ুন: ১১ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব, হাস্যকর বলছেন নেতারা
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মতো আমিও চাই, এই আইন কোনোভাবে আপনাদের দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে যেন প্রতিবন্ধক না হয়। যখনই সে ধরনের ঘটনা ঘটে, আমি জানি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমার নজরে আনা হয়, আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গ তুলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে যেভাবে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করছে, আমি মনে করি এটি বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থার বিকাশের জন্য গণমাধ্যমের এই স্বাধীনতা অপরিহার্য। দেশে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করছে বিধায় আমাদের দেশে যে কেউ যে কোনো কিছু করে পার পেতে পারে না। হয়ত অনেক সময় আইনের ফাঁক দিয়ে সে পার পেয়ে যায় কিংবা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যাদের দায়িত্ব তাদেরকেও নানাভাবে ম্যানেজ করে পার পেয়ে যায়। কিন্তু যখন সেটি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় জনগণের কাছে পার পায় না। জনগণের কাছে সে অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত হয়।’ তবে আমার স্বাধীনতা যেন অন্যের স্বাধীনতাকে খর্ব না করে সে বিষয়টিও সাংবাদিকদের স্মরণ করিয়ে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সারাবাংলা/এনআর/একে