‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:১৩
ঢাকা: প্রস্তাবিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ এর খসড়ায় ব্যক্তিতথ্য সুরক্ষার নামে ‘বিরুদ্ধ’ মত নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ও স্বাধীন মতপ্রকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আইনটি জনসাধারণের তথ্যের সুরক্ষার পরিবর্তে কোনোভাবেই যেন সরকারের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে জনমত সৃষ্টি এবং ব্যক্তির মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যবহৃত না হয়, সেজন্য সরকারকে স্বচ্ছতার সাথে আইনসংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে একসঙ্গে নিয়ে বৃহৎ পরিসরে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে একটি প্রাগ্রসর এবং সময়োপযোগী জনবান্ধব আইন প্রণয়ন করতে হবে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ব্যক্তিজীবনে যেভাবে ডিজিটাল স্পেসের গুরুত্ব বাড়ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসব প্ল্যাটফর্মে দেওয়া তথ্যের সুরক্ষায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এ জাতীয় আইন করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনটির মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে, জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ব্যক্তি যেন ভার্চুয়াল জগতে নিরাপদ বোধ করেন, তার ব্যবস্থা করা।’
‘কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে হতাশাজনক হলেও সত্য যে, ইতিপূর্বে প্রণীত ‘নিরাপত্তা’ ও ‘সুরক্ষা’ শব্দযুক্ত আইনগুলো মোটাদাগে নিবর্তনমূলক হিসেবেই প্রমাণিত হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যমান বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণনয় পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন যে সকল আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, পরবর্তী সময়ে তার আক্ষরিক প্রতিফলন ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘নিরাপত্তার’ পরিবর্তে স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সরকারের সমালোচনাকারীদের কণ্ঠরোধ করার পাশাপাশি সরকারের অবস্থান সংহত করতে আইনটির যথেচ্ছ ব্যবহার আমরা লক্ষ করছি’, বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনে অন্য দেশের আদলে ‘পারসনাল ডেটা প্রোটেকশন আইন’- এর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই সত্যি, কিন্তু শঙ্কার বিষয় হলো আমাদের শাসকগোষ্ঠীর মানসিকতা, প্রবণতা ও উদ্দেশ্য! তাই, প্রস্তাবিত আইনটি যাতে অধিকতর জনবান্ধব, ব্যক্তিতথ্যের সুরক্ষা এবং স্বাধীন মত ও ভাব প্রকাশের সহায়ক হয়, তা নিশ্চিত করতে বৃহৎ পরিসরে সব পক্ষের অংশগ্রহণে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে আইনটি করতে হবে।’
সারাবাংলা/এজেড/এমও