Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জামিন আবেদন নাকচ, ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:৪৫

প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক, ফাইল ছবি

ঢাকা: ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় কারা অধিদফতরের সিলেট রেঞ্জের বরখাস্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পার্থ গোপাল বণিকের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই রাজধানীর নর্থ রোডে তার ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), যে টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি।

রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল।

বিজ্ঞাপন

এদিন আদালতে পার্থ গোপালের পক্ষে জামিন শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। পরে আদালত দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, এর আগে উচ্চ আদালত পার্থ গোপাল বণিককে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই আদেশ অনুযায়ী আজ (রোববার) তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে দেন।

এর আগে, ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের সময়েই গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ গোপাল বণিক। ওই সময় থেকেই কারাগারে ছিলেন তিনি। এর মধ্যে গত ১৭ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চুয়াল আদালত পার্থ গোপাল বণিককে জামিন দিলে তিনি কারামুক্ত হন। তবে ২৩ জুন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই আদালত পার্থের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

বিজ্ঞাপন

বিচারিক আদালতের এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। ২৮ জুন সেই আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্ট গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে বিচারিক আদালতকে ব্যাখ্যা দিতেও নির্দেশ দেন। পরে পার্থ গোপাল বণিককে ‘অস্বাভাবিকভাবে’ জামিন দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন।

পরে গত ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন বাতিলের রায় দেন। আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশও দেন আদালত। একইসঙ্গে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ থেকে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এ পাঠিয়ে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয় রায়ে।

এর আগে, ২০১৯ সালর ২৮ জুলাই সকাল থেকে পার্থ গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেলে তার নর্থ রোডের বাসায় অভিযান চালান দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ। অভিযানে তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধ বাদী হয়ে মামলা করেন দুদক ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন। একদিন পর ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ পার্থ গোপাল বণিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। তার গ্রেফতারের দিন থেকেই এই আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়।

একবছর পর ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন এই মামলায় পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্থ গোপাল তার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। ২০১৪ সালে কারা উপমহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর পার্থ গোপালের বেতন স্কেল হয় ৩১ হাজার ২৫০ টাকা, যার সঙ্গে তার কাছে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়ার ঘটনাটি অসঙ্গতিপূর্ণ।

আদালত গত বছরের ৪ নভেম্বর পার্থ গোপালের অব্যাহতির আবেদন নাকচ ও অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ১৫ ডিসেম্বর।

সারাবাংলা/এআই/টিআর

জামিন নাকচ ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর