‘আমারও মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন ছিল’
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:৫৩
ঢাকা: ‘মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন সব রাজনীতিকরই থাকে। তেমনি আমারও ছিল। আমিও মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। একসময় সে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূরণ করেছেন। সেজন্য তার প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।’ এভাবেই নিজের স্বপ্ন পূরণের কথা বলছিলেন স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ের নিউজ সংগ্রহে নিয়োজিত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে পারিবারিক ও দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ছোট থেকেই রাজনৈতিক আবহে বেড়ে উঠেছি। রাজনীতিতে জড়িয়েছি। আমারও মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন।
তিনি বলেন, আমি কখনও ভাবিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হবে। যখন মন্ত্রীপরিষদ সচিব বললেন যে, আমাকে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী করা হয়েছে তখন আমি ভীষণ খুশি হয়েছি এবং সারপ্রাইজড হয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। এটা চ্যালেঞ্জিং জব। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত ছিলাম। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের ক্ষেত্রটা আমার জন্য নতুন। দায়িত্ব নিয়ে আমি প্রথমে বোঝার চেষ্টা করেছি। তারপর কাজ শুরু করেছি, এখন কাজ করতে পারছি। কখনও মনে হয়নি এটা খুব কঠিন জব।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কারণে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনাকে যত বেশি শক্তিশালী করা যাবে, দেশ ততবেশি শক্তিশালী হবে। ম্যান ইজ দ্যা মেইন মেকার অব মানি, তো ম্যান যখন মানি মেক করবে, তাদেরকে কাজে লাগাতে হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বাইরে থেকে একজন লোক গ্রামে গিয়ে খবরদারি করতে পারবে না। ঢাকা থেকে সচিব, মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক গিয়ে গ্রামের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে না। জেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশনকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নতি করা সম্ভব
নিজের পারিবারিক অবস্থান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করি। আমি দারিদ্র্য দেখেছি। এতে আমিও বিভিন্ন সময় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছি। মানুষের কষ্ট-দুঃখের মধ্য দিয়ে আমি জীবনকে অনুভব করার সুযোগ পেয়েছি। সে কারণে আমি বিশ্বাস করি, অভিজ্ঞতা যা অর্জন হয়েছে তা যদি কাজে লাগাই তাহলে মানুষ হিসেবে নিজেকে সার্থক হিসেবে মনে করব। সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই রাজনীতিতে এসেছি। জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই ১৯৯৬ সালে।
তিনি বলেন, কোনো মানুষই ত্রুটিমুক্ত নয়, আমিও নই। সব পেশাতেই এমন ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এটা কমে যায় যদি রাষ্ট্র সেখানে তার সঠিক দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পায় বা পালন করা হয়। এজন্য জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকা দরকার। আমার মন্ত্রী হিসেবে জবাবদিহিতা থাকলে আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারব।
ত্রাণ বিতরণের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণ যখন শুরু হলো তখন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে ত্রাণ আত্মসাতের খবর এলো। আমি সেটা গণমাধ্যমে দেখে স্থানীয় জেলা প্রশাসকদের তথ্য সংগ্রহের জন্য বলেছি। আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করে শাস্তির ব্যবস্থা করেছি।
নিজের মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা টেকসই রাস্তা তৈরিতে কাঠামোগত পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছি। জেলা পরিষদ ও পৌরসভায় অডিটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা স্বচ্ছতার জন্য। এতে প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়বে, স্বনির্ভর হবে। যেমন জলাবদ্ধতা কমাতে আমরা রাজধানী ঢাকার হারিয়ে যাওয়া খালগুলো সঠিক ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়েছি। এ কারণে দায়িত্ব ওয়াসার কাছ থেকে নিয়ে সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন কাজ করছে। প্রজেক্ট বানানো হচ্ছে, জলাধারগুলো ঠিক করা হচ্ছে। ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কাজ করা হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে।স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করে নাগরিকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে মন্ত্রণালয় বদ্ধপরিকর।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ