‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকায় ল্যাব স্থাপনে দেরি’
২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৩৪
ঢাকা: বাংলাদেশসহ ১০টি দেশ থেকে আগতদের জন্য ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দর থেকেই র্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষার শর্ত আরোপ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনে সাত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতিও দিয়েছে সরকার। তবে এখন পর্যন্ত ল্যাব স্থাপনের কাজে নেই অগ্রগতি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকায় ল্যাব স্থাপনের কাজে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমেদ।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী।
প্রবাসী ও বিদেশগামীদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা পরীক্ষার ল্যাব চালু হবে কবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘এটা তো এক সপ্তাহ আগে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকায় একটু সময় লাগছে। এই সমস্যার আজ মোটামুটি একটা সমাধান হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব হলো প্রবাসীদের যাওয়াটা সহজ করে দেওয়া। এই প্রক্রিয়া সহজ করে দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনের। আজকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে, এত দিন আমরা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত চেয়েছে বিমানবন্দরে র্যাপিড পিসিআর টেস্ট। কিন্তু আমাদের দেশে র্যাপিড পিসিআর পরীক্ষার যন্ত্র নেই। এজন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) পাঠানো হয়েছে। আমরা যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমোদন দিয়েছি তাদের এসওপি ইতোমধ্যেই পাঠানো হয়েছে সে দেশের দূতাবাসে।’
এসওপি পাঠানোর বিষয়টি সিভিল এভিয়েশনের কাজ জানিয়ে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘এটা প্রবাসী কল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেখার বিষয় নয়। এটা তারা কোথায় পাঠিয়েছেন, কোথায় ক্লিয়ারেন্স পাবেন সেই ভিত্তিতে সিভিল এভিয়েশন কাজ করে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আগের সিদ্ধান্ত ছিল সাতটি প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষাগার করতে দেওয়া হবে। টেকনিক্যাল কমিটি সিলেকশন করেছে। এটা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, এর পরে সেটি আমরা সিভিল এভিয়েশনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। আপাতত আরটি-পিসিআর ল্যাবের কাজ দিচ্ছি, পরে র্যাপিড পরীক্ষাও আমরা বিবেচনায় নেব। এটা কোথায় গিয়ে ঠেকবে আমি এখনও বলতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই আরটি-পিসিআর মেশিন বসানো হবে। তবে র্যাপিড পিসিআর মেশিন আমাদের কাছে নেই। এটা বিদেশ থেকে আনতে হবে। যার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। আশা করছি সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আমরা এসব মেশিন এনে বসাতে পারব।’
তবে বিমানবন্দরে পার্কিংয়ের স্থানে ছাদ তৈরি করতে ১০ দিন লাগবে জানিয়ে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘এখানে পার্কিংয়ের ছাদ তৈরি করতে ১০ দিন লাগবে। সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশলী বিভাগ সেটি করে দিবে। তবে বিমানবন্দরের ভেতরেও জায়গায় আছে, সেখানে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে কাজ হবে। যাদের এসব মেশিন বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে ল্যাবগুলো বলেছিল নমুনা পরীক্ষার কাজ করবে— তারা যদি এখন বলে যন্ত্র নেই, আমদানি করতে হবে; তবে আমি তাদের বলব, বাড়িতে চলে যাও। অঙ্গীকার অনুযায়ী, আগামী তিন দিনের মধ্যে ল্যাব বসাতে হবে।’
এ দিন সকালে বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনের সংকট সমাধান ও স্থান নির্ধারণের জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ।
এর আগে, শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরের কার পার্কিং ইয়ার্ডে বিদেশগামী কর্মীদের করোনা পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের সাইট পরিদর্শন করেন মন্ত্রী ইমরান। সেদিন মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিমানবন্দরে আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই ল্যাব স্থাপনসহ আরটি পিসিআর কার্যক্রম শুরু হবে।’
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম