ভাষা সৈনিক আহমদ রফিককে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের আহ্বান
২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:৩২
ঢাকা: ভাষা সৈনিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী আহমদ রফিককে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন ১৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এই গুণী ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় অসহায় জীবনযাপন করছেন বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গতকাল মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ওই চিঠিটি প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ভাষা সৈনিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী আহমদ রফিক অসুস্থ অবস্থায় অসহায় জীবনযাপন করছেন। তিনি আমাদের মহান মনীষী। ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেছেন। বাঙালির প্রতিটি আন্দোলনে তার তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সৃষ্টিশীল লেখা ও গবেষণা ছাড়াও জাতীয় ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। বাংলাভাষা ও সাহিত্যে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি একাধারে কবি, কথাশিল্পী, সাহিত্য-সমাজ-রাজনীতি-বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ে বহু গ্রন্থের লেখক, তিনি রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য।
আহমদ রফিক পেশায় ডাক্তার ছিলেন। দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন তিনি। রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র ট্রাস্ট’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশ পদক পেয়েছেন এই গুণী মানুষ। এছাড়াও কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’উপাধিতে ভূষিত করেছে বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে তারা আরও বলেন, আহমদ রফিক তার জমানো ২০ লাখ টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্ট করে খরচ করেছেন। তার কোনো সন্তান নেই, একা মানুষ। এখন প্রবল আর্থিক কষ্টে পড়েছেন। খুব সম্প্রতি তার ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘আজকের পত্রিকা’য় এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আইন চেয়েছেন। আমরা তার এই দাবির সঙ্গে তার বর্তমান অবস্থার সম্পৃক্ততা অনুভব করে বিচলিত বোধ করছি।
আহমদ রফিক অত্যন্ত আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ, কোনো অবস্থাতেই ব্যক্তি মানুষের দান-খয়রাত গ্রহণ করতে একেবারেই প্রস্তুত নন। এ পরিস্থিতিতে তার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অনেক লেখকের কল্যাণে এগিয়ে এসেছেন। আহমদ রফিককে এককালীন ৩০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করে তার বাকি জীবনটাকে শান্তিপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ করে তুলবেন বলেও আশা প্রকাশ করা হয় ওই চিঠিতে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- কবি ও প্রাবন্ধিক শোয়াইব জিবরান, কবি ওবায়েদ আকাশ, সাহিত্যিক ও শিক্ষক আহমাদ মোস্তফা কামাল, ব্লগার রাজীব নূর, কবি, লেখক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী, লেখক লোপা মমতাজ, জোবাইদা নাসরিন, কবির হুমায়ূন, কবি আলফ্রেড খোকন; কবি, কথা সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীম রেজা, কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রেজা ঘটক, কবি আফরোজা সোমা, কবি পিয়াস মজিদ, লেখক মোজাফফর হোসেন, বাংলাদেশি লোক সংস্কৃতি গবেষক এবং নাট্যকার সাইমন জাকারিয়া, লেখক ও গবেষক স্বকৃত নোমান, কবি শাহেদ কায়েস ও লেখক সরকার আমিন।
সারাবাংলা/এনএস