করোনা ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক জনস্বার্থ সামগ্রী’ ঘোষণার আহ্বান
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০০:২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক জনস্বার্থ সামগ্রী’ ঘোষণার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, কার্যকরভাবে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক জনস্বার্থ সামগ্রী’ হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ‘হোয়াইট হাউজ গ্লোবাল কোভিড-১৯ সামিট: এন্ডিং দ্য প্যানডেমিক অ্যান্ড বিল্ডিং ব্যাক বেটার হেলথ সিকিউরিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ধারণ করা বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেখানে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় ভার্চুয়াল এ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সম্মেলনে ভাষণে জো বাইডেন কোভিড-১৯ মহামারি অবসানে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার জন্য রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ব্যবসায়ী এবং বেসরকারি নেতাদের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো, আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভ্যাকসিন লাভের সার্বজনীন অধিকার নিশ্চিত করা লক্ষ্যে সক্ষমতা রয়েছে— এমন উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মাধ্যমে ভ্যাকসিন স্থানীয় উৎপাদনের সুযোগ দেওয়া উচিত।
হোয়াইট হাউজ আমন্ত্রিতদের জানিয়েছে, এ বছরের শেষের দিকে এবং ২০২২ সালের শুরুতে ফলোআপ ইভেন্টগুলো অংশগ্রহণকারীদের তাদের প্রতিশ্রুতির জন্য দায়বদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তিনটি ধাপে কাজ করছে। প্রথমত, জীবন বাঁচানোর লক্ষ্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা, যন্ত্রপাতি, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং সম্পদ বরাদ্দ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের, বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবিকা সুরক্ষায় সহায়তা দেওয়া এবং যত তাড়াতাড়িসম্ভব অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।
কোভিড মহামারি মোকাবিলায় সরকারের দ্বিতীয় পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছে, যেন উদ্ভাবন, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছে। তৃতীয়ত, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা ও কম কার্বণ নিঃসরণের দিকে মনোনিবেশও করছে সরকার।
কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ বরাদ্দ করেছি। দরিদ্র, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীসহ ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন সুবিধাভোগীদের ১৬৬ মিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ লোককে টিকা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা প্রতি মাসে দুই কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। বাসস।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এনআর/টিআর