২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত দুটোই কমেছে
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:১২
ঢাকা: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই কমেছে। এ সময়ে দেশে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা আগের দিন বুধবার ছিল ৩৬ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১১৪ জন করোনা রোগী, যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৩৭৬ জন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় গড় শনাক্তের হার কমেছে। বুধবার ১০০টি নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এর পরের ২৪ ঘণ্টায় বৃহস্পতিবার এই হার কিছুটা কমে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে পরীক্ষাগার ছিল ৮১৪টি। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৪৫টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৬টি ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৬১৩টি।
এ সব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য সারাদেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ২৪ হাজার ৮৬৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪ হাজার ৮২০টি নমুনা। এ নিয়ে এ পর্যন্ত দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ লাখ ৫১ হাজার ৯৭০টিতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭০ লাখ ৪৬ হাজার ৭০৭টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৫ লাখ ৫ হাজার ২৬৩টি।
২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৪৪ জন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। এ ছাড়া মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ। শনাক্তের বিপরীতে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় কমেছে মৃত্যুও: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ২৪ জন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৩৬ জন। এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেলেন মোট ২৭ হাজার ৩৩৭ জন। সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
পুরুষ ও নারীর মৃত্যুর পরিসংখ্যান: গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২৪ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ১০ জন, নারী ১৪ জন। এ নিয়ে দেশে করোনা আক্রান্ত পুরুষ মারা গেলেন ১৭ হাজার ৫৬৬ জন, নারী ৯ হাজার ৭৭১ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ রোগী মৃত্যুর হার ৬৪ দশমিক ২৬ শতাংশ, নারী রোগী মৃত্যুর হার ৩৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক মৃত্যুর পরিসংখ্যান: বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে— গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২৪ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছর। আরও ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর। ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী মারা গেছেন ৪ জন করোনা রোগী ও ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী দুইজন মারা গেছে এই সময়ে। এ ছাড়া করোনায় ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী দুইজন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী দুইজন মারা গেছেন।
এখন পর্যন্ত মোট হিসাব বলছে, দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের মধ্যে— ৮ হাজার ৪৯৩ জন, যা মোট মৃত্যুর ৩১ দশমিক ০৭ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৪৫৮ জনের (২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ) বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর ও তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭৫৬ জনের (১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ) বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছর। অন্যদিকে করোনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম ০ থেকে ১০ বছর বয়সী (শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ) যা সংখ্যায় ৭৪ জন। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী মোট মারা গেছে ১৭৫ জন। যার শতকরা হার শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বিভাগভিত্তিক মৃত্যুর তথ্য: বিভাগওয়ারী মৃতদের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১ জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ জন মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। এছাড়া ৩ জন করে মারা গেছেন খুলনা ও সিলেট বিভাগে। রংপুর বিভাগে মারা গেছেন একজন।
এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুও ঢাকা বিভাগে— ১১ হাজার ৯১০ জন, যা করোনায় মোট মৃত্যুর ৪৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে করোনায় সবচেয়ে কম মারা গেছে ময়মনসিংহ বিভাগে মোট ৮২৫ জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন পাঁচজন।
কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন: গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৫৩ জন, কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ১১৬ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৮৯ জন, ছাড়া পেয়েছেন ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৫১২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৬ হাজার ৮৭৭ জন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৩৩৮ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৭৬০ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৭০ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪৩ হাজার ৪২৪ জন।
স্ক্রিনিং সংক্রান্ত তথ্য: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং হয়েছে মোট ৫ হাজার ৪৯০ জনের। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং হয়েছে ৪ হাজার ৯৪৩ জনের, স্থলবন্দরসমূহে স্ক্রিনিং হয়েছে ৪২৫ জনের, সমুদ্রবন্দরে স্ক্রিনিং হয়েছে ১২২ জনের। এ পর্যন্ত বিমানবন্দরে মোট স্ক্রিনিং হয়েছে ২০ লাখ ৬৭ হাজার ৪১৪ জনের, স্থলবন্দরে স্ক্রিনিং হয়েছে ৫ লাখ ৬২ হাজার ২৫৩ জনের।
সারাবাংলা/একে