সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইক উচ্ছেদের প্রতিবাদে সমাবেশ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:৫২
ঢাকা: সড়ক-মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত যানবাহন উচ্ছেদ নয়, আধুনিকায়ন করে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক এবং স্বল্প গতির যানবাহন চলাচলসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রিকশা-ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সহস্রাধিক রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক এই সমাবেশে অংশ নেয়।
সমাবেশে সড়ক-মহাসড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইক উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, নীতিমালা প্রণয়ন ও লাইসেন্স প্রদান করে রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন করে দেশের প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে রিকশা, ইজিবাইকসহ স্বল্প গতির এবং জনগণের সীমিত গতির যানবাহন চলাচলের স্বার্থে পৃথক লেন, সার্ভিস রোড নির্মাণ করতে হবে।
সমাবেশে নেতারা আরও বলেন, ‘বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলে একদিকে এই পেশায় নিয়োজিত প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক ও তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলির প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। অন্যদিকে অপ্রশস্ত সড়কগুলোতে শ্রমজীবী মানুষ, রোগী কিংবা পণ্য পরিবহন হয়ে পড়বে দুরূহ ও ব্যয়বহুল।’
তা ছাড়া জলবায়ু দূষণ রোধ করে পরিবেশের সুরক্ষার জন্য বর্তমান বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিষ্কারের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ তাদের জীবনকে সহজ করবে এটিই মানব সমাজের পরিবর্তনের সাধারণ নিয়ম। সরকারের কাজ পরিবর্তনগুলো সীমাবদ্ধতাসমূহ দূর করে তাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার চেষ্টা করা, নতুন পরিবর্তনকে বন্ধ করা নয় সেই নিয়মের ধারাবাহিকতায় হাতে টানা রিকশা আজ প্যাডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। তার সঙ্গে ব্যাটারি যুক্ত হয়ে যান্ত্রিক যানে পরিণত হয়েছে। সরকারের দায়িত্ব ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইকের কাঠামোগত কোন দুর্বলতা থাকলে তা চিহ্নিত করে,তা দূর করে লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করা।
সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়, সেগুলো হলো-
ক. ব্যাটারি চালিত যানবাহন চলাচল নীতিমালা প্রণয়নে ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা ও লাইসেন্স প্রদান করা। এসব দাবিতে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা।
খ. একই দাবিতে আগামী ১ থেকে ১৫ অক্টোবর সারাদেশে প্রচার পক্ষ পালন করা। আগামী ১১ অক্টোবর সারাদেশে ডিসি অফিসের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং প্রত্যেক জেলায় বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা।
গ. আগামী ১৫ থেকে ৩০ অক্টোবর ৪ দফা দাবিতে বিভাগীয় শহরে ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক চালক, গ্যারেজ মালিক, মেকানিক, শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ঘ. আগামী ১ থেকে ২০ নভেম্বর বিভাগীয় শহরসহ প্রতিটি জেলায় স্থানীয় রাজনৈতিক, ট্রেড ইউনিয়ন পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, মেকানিক, চালক-মালিক-যাত্রী প্রতিনিধিদের নিয়ে ব্যাটারি চালিত যানবাহন উচ্ছেদ নয় সাধারণ যাত্রী ও শ্রমিকদের স্বার্থে আধুনিকায়ন চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া আগামী ২০ থেকে ৩০ নভেম্বর প্রত্যেক জেলা অঞ্চলে চার দফা দাবিতে সমাবেশ মানববন্ধন ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময়ের মধ্যে সরকার এসব দাবি বাস্তবায়ন না করলে আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ঢাকায় মহাসমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে সদস্যসচিব প্রকৌশলী ইমরান হাবিবের পরিচালনায় শ্রমিকের সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লা-হেল কাফি রতন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা প্রমুখ।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে