২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্ত দুটোই কম
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৮:১৪
ঢাকা: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই কমেছে। এ সময় দেশে করোনায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে যা আগের দিন ছিল ৩১ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮১৮ জন যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ২৩৩ জন।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় গড় শনাক্তের হার কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। শনিবার এই হার কিছুটা বেড়ে ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৭১ জন।
নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে পরীক্ষাগার ছিল ৮১৫টি। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৪৫টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৬টি ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৬১৪টি।
এ সব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য সারাদেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ১৭ হাজার ৫১৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নতুন ও পুরনো নমুনা মিলে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ হাজার ৮১৮টি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ লাখ ৯৬ হাজার ৯২৯টিতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭০ লাখ ৭৬ হাজার ৯৬৯টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৫ লাখ ১৯ হাজার ৯৬০টি।
২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮১৮ জন। যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ২৩৩ জন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা কমলেও গড় শনাক্তের হার বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। একই সময়ে মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৯৬৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ১০ হাজার ১৬৭ জন। শনাক্তের বিপরীতে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
কমেছে মৃত্যুও: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ২৫ জন যা আগের দিন ছিল ৩১ জন। এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেলেন মোট ২৭ হাজার ৩৯৩ জন। সংক্রমণ বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
পুরুষ ও নারীর মৃত্যুর পরিসংখ্যান: গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২৫ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন, নারী ১১ জন। এ নিয়ে দেশে করোনা আক্রান্ত পুরুষ মারা গেলেন ১৭ হাজার ৫৯৮ জন, নারী ৯ হাজার ৭৯৫ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ রোগী মৃত্যুর হার ৬৪ দশমিক ২৪ শতাংশ, নারী রোগী মৃত্যুর হার ৩৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক মৃত্যুর পরিসংখ্যান: বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে— গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২৫ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছর। এ ছাড়া ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী মারা গেছেন একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী মারা গেছেন দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী মারা গেছেন চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মারা গেছেন ছয়জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী মারা গেছেন তিনজন, ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী দুইজন মারা গেছেন।
এখন পর্যন্ত মোট হিসাব বলছে, দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের মধ্যে— ৮ হাজার ৫০৯ জন, যা মোট মৃত্যুর ৩১ দশমিক ০৭ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৪৭০ জনের (২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ) বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর ও তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭৬৪ জনের (১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ) বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছর। অন্যদিকে করোনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম ০ থেকে ১০ বছর বয়সী (শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ) যা সংখ্যায় ৭৪ জন। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী মোট মারা গেছে ১৭৫ জন। যার শতকরা হার শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বিভাগভিত্তিক মৃত্যুর তথ্য: বিভাগওয়ারী মৃতদের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১ জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ জন মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে, খুলনায় মারা গেছেন চারজন। এ ছাড়া সিলেট-রংপুর মারা গেছেন দুইজন করে।
এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুও ঢাকা বিভাগে— ১১ হাজার ৯৩৭ জন, যা করোনায় মোট মৃত্যুর ৪৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অন্যদিকে করোনায় সবচেয়ে কম মারা গেছে ময়মনসিংহ বিভাগে মোট ৮২৬ জন। এই বিভাগের মোট মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৯ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৬ জন।
কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন: গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৬৪ জন, কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৬২২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭৯ জন, ছাড়া পেয়েছেন ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৯১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৫ হাজার ৭৮৮ জন।
এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৬১ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৪৯৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৪৪৮ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪২ হাজার ৮৯৯ জন।
স্ক্রিনিং সংক্রান্ত তথ্য: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং হয়েছে মোট ৭ হাজার ৫১৫ জনের। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং হয়েছে ৬ হাজার ৬৪১ জনের, স্থলবন্দরসমূহে স্ক্রিনিং হয়েছে ৭০৪ জনের, সমুদ্রবন্দরে স্ক্রিনিং হয়েছে ১৭০ জনের। এ পর্যন্ত বিমানবন্দরে মোট স্ক্রিনিং হয়েছে ২০ লাখ ৭৮ হাজার ৭৯০ জনের, স্থলবন্দরে স্ক্রিনিং হয়েছে ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৮০৭ জনের।
সারাবাংলা/একে