বিডিএসে কোটায় অ-আদিবাসী শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের দাবিতে বিবৃতি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:০৭
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত স্বাস্থ্য শিক্ষার জন্য দেশের সরকারি ডেন্টাল কলেজ ও মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে (বিডিএস) ভর্তির জন্য নির্ধারিত আদিবাসী কোটায় আবারও অ-আদিবাসী শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়েছে । আর এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সমাজের বিভিন্ন স্থানে কাজ করা ২১ বিশিষ্ট জন এ বিষয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। সেখানে বলা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিডিএস (ডেন্টাল) কোর্সে শিক্ষার্থীদের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
ভর্তির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিডিএস কোর্সে আদিবাসীদের জন্য পাঁচটি আসন সংরক্ষিত। এই পাঁচ আসনের মধ্যে পার্বত্য এলাকার আদিবাসীদের জন্য তিনটি এবং অন্য আদিবাসীদের জন্য দুটি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা।
পার্বত্য এলাকার তিন আসনে সঠিক নিয়মেই শিক্ষার্থী মনোনীত হলেও অন্য আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত দুই আসনে (কোড-৭৭) মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বাঙালি শিক্ষার্থীদের। এই ভর্তি পরীক্ষায় সমতলের আদিবাসীদের মধ্যে ১৫ জন কৃতকার্য হলেও তাদের কাউকেই ভর্তির জন্য মনোনীত করা হয়নি।
আরও জানানো হয়, কৃতকার্যদের মধ্যে পাঁচজন সাঁওতাল, চারজন গারো, তিনজন মণিপুরী, দু’জন ওরাঁও এবং একজন হাজং জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী রয়েছেন। সমতল আদিবাসীদের জন্য ৭৭ কোডে নির্ধারিত ২ জন আদিবাসী শিক্ষার্থীর স্থানে অ-আদিবাসী শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তারা হলেন (১) আবু মো. মোস্তফা কামাল (রোল-৫৬০৩৭৫০), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিট, ঢাকা এবং (২) আন্জুম ফারিয়া (রোল- ৫৪০৬৮৪২), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিট। এ সব শিক্ষার্থীর কেউই বাংলাদেশ সরকারের গেজেটভুক্ত ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (আদিবাসী জাতিসত্তার) সদস্য নয়।
অবিলম্বে এ সব রোলধারী অ-আদিবাসী শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশ করার জোর দাবি জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও বলা হয়, আদিবাসী কোটায় অ-আদিবাসীরা কীভাবে স্থান পায়, তার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রযোজন। আদিবাসী কোটায় শুধুমাত্র আদিবাসী শিক্ষার্থীদেরকেই নির্বাচন করতে হবে। আদিবাসী কোটায় নির্বাচিত অ-আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ফলাফল বাতিল করে সেসব আসনে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করে পুনরায় ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। এই অনিয়ম বন্ধ হওয়া জরুরি।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভাপতি, মহিলা পরিষদ, ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সভাপতি, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী, রোকেয়া কবির, উন্নয়ন কর্মী, এস.এম.এ সবুর, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, আইনজীবি, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, দীপায়ন খীসা, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব), এ কে আজাদ, সংস্কৃতি কর্মী, অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতিকর্মী, বিভূতিভূষণ মাহাতো, সদস্য, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি, কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী এবং গৌতম শীল, সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল)।
সারাবাংলা/জেআর/একে