‘অদেখা শেখ হাসিনা’কে সামনে আনল প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:৩২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোনো একটি ছবিতে বসে আছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সঙ্গে সন্তান কোলে, আবার কোনোটিতে ভাইবোনদের সঙ্গে। কিছু আছে সুখস্মৃতি, কিছু আছে সংগ্রামের। একেবারে আটপৌরে সহজ-সরল বাঙালি নারীর জীবন থেকে সংগ্রামের কঠিন মঞ্চে। এক রাতেই পিতামাতা, ভাইবোনসহ পুরো পরিবার হারিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে পরিবার বানিয়ে নেতৃত্বের পথে চলা, আন্দোলনের নেত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়ে অপ্রতিরোধ বিশ্বনেত্রীর কাতারে পৌঁছে যাওয়া— সচরাচর যেসব ছবি দেখা যায় না, শেখ হাসিনার এমন অদেখা ছবি সামনে এনেছে চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় ক্যাম্পাসে ‘অপ্রতিরোধ্য শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী কর্মসূচিতে শেখ হাসিনার ছবিগুলো উন্মুক্ত করা হয়। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের জমায়েত হয় ক্যাম্পাসে। অদেখা ছবিগুলো দেখে কারও মনে জেগেছে বিস্ময়, কেউ পেয়েছেন অনুপ্রেরণা।
প্রদর্শনী দেখতে যাওয়া প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখানে এমন ছবি আছে যেগুলো আমরা আগে কখনোই দেখিনি। এসব ছবি দেখে আগামী প্রজন্মের মাঝে শেখ হাসিনার চেতনা, দেশপ্রেম সঞ্চারিত হবে। অনেক দুর্লভ ছবি এখানে দেখলাম।’
একই বিভাগের শিক্ষার্থী তুষার চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন শুধু একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা একটি দেশের প্রধানমন্ত্রিত্বের গণ্ডিতে আবদ্ধ নন। তিনি এখন বিশ্বনেতা। আজকের দিনে আমরা যারা ছাত্র, আমাদের মধ্যেই কেউ কেউ বাংলাদেশের ভবিষ্যত কাণ্ডারি। শেখ হাসিনার এই অদেখা ছবির ভাণ্ডার তাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অরুণিমা অনিমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আয়োজনটি খুব ভালো হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আয়োজনে আমরা গর্বিত। অনেক না জানা তথ্য আমাদের চোখের সামনে এসেছে।’
মঙ্গলবার সকালে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ভার্চুয়ালি দেশের বাইরে থেকে সংযুক্ত ছিলেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন। অতিথি হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হাসিনা মহিউদ্দিন, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সাবিহা মুসা ও বোরহানুল হাসান চৌধুরী এবং ট্রেজারার প্রফেসর এ কে এম তফজল হক। এছাড়া বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য রেমন্ড আরেং ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘আমাদের এই বাংলা হাজার বছর পরাধীন ছিল। এই সুদীর্ঘ সময় অনেক শাসক বাংলাকে শাসন করেছে। এসব শাসক, শাসক হিসেবে কখনো স্বাধীন, কখনো পরাধীন ছিল বটে; কিন্তু বাংলার মানুষ কখনো স্বাধীনতা পায়নি, স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার পায়নি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পরে বাংলার পরাধীন মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তিনি বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতা।’
শেখ হাসিনা রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এনেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনার পর প্রায় ছয় বছর প্রবাসজীবনে থেকে ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফেরেন। তিনি এসেই বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হন। তার উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মানচিত্রে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত।’
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট একটি বিশ্বচক্রান্তের ফলস্বরূপ কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালির ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। বিশ্ববাসীর কাছে বাঙালিকে করেছে লজ্জিত। সেদিন তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশে না থাকায় বেঁচে যান। সেদিন তারা যদি দেশে থাকতেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ তাদের কাণ্ডারি হিসেব শেখ হাসিনাকে পেত না। বাংলাদেশের আজ যে বিস্ময়কর উন্নয়ন তাও সম্ভব হতো না।’
অনুষ্ঠানে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন।
ছবি: শ্যামল নন্দী
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
অদেখা শেখ হাসিনা আলোকচিত্র প্রদর্শনী প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম