চট্টগ্রাম ব্যুরো: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখন বিশ্ববাসীর কাছে গণতন্ত্রের নেত্রী, মানবতার নেত্রী ও উন্নয়নের নেত্রী। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় চবিতে নব নির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনলাইনে অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য) অফিস থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা-গবেষণায় যে অবদান রেখে যাচ্ছে তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে জ্ঞান-গবেষণায় আরও এগিয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিনে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানান। জন্মদিন উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শুভ উদ্বোধন করায় চবি উপাচার্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন,ক্ষণজন্মা এ মহিয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছে বলেই বাঙালি জাতি আজ বিশ্ব দরবারে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বাংলাদেশ সময় এবং সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার জন্য নয়, দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্ত রাজনীতিতে বিশ্বাসী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার মান অধিকতর উন্নয়নে এবং দক্ষ, যোগ্য ও আলোকিত মানবসম্পদ উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন বলে শিক্ষা উপমন্ত্রী এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.শিরীণ আখতার বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার অন্যতম সহযাত্রী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ মহিয়সী নারীর নামে একটি হল প্রতিষ্ঠা করতে পেরে আমরা অত্যন্ত গৌরব অনুভব করছি। শত ব্যস্ততার মাঝেও শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আয়োজনে যুক্ত হওয়ায় কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনলাইনে অংশে নেন। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.শিরীণ আখতার। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. প্রকাশ দাশগুপ্ত এবং প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হল প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা পালি বিভাগের প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু।
এর আগে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিনব্যাপি নানান কর্মসূচি পালন করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর ৭৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে চবি প্রশাসন আয়োজিত কর্মসূচির আওতায় সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন-২০২১ এবং ১১টায় চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে চবি পরিবারের সদস্যদের মাঝে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
এছাড়াও কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপাচার্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল প্রাঙ্গনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের আয়োজনে দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন উপাচার্য। এসময় ওই হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. এ কে এম রেজাউর রহমান এবং হলের আবাসিক শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে তার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং দেশ-জাতির উন্নতি-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে ফজরের নামাজের পর ক্যাম্পাসে সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নিজ নিজ উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
চবি সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যরা, বিভন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক সমিতি, কলেজ পরিদর্শক, প্রভোস্টরা, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টর, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক, শিক্ষক, অফিস প্রধান, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়ন এবং সাংবাদিকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।