রিমান্ড মানে মারধর-ভয়-ভীতি না— মুফতি ইব্রাহীমকে আদালত
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:৫৩
ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মুফতি কাজী ইব্রাহীমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালত।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের এসআই মো. হাসানুজ্জামান কাজী ইব্রাহীমকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
তারপর এক পর্যায়ে আদালতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ার পর মুফতি ইব্রাহীমকে আদালত বলেন, ‘রিমান্ড মানে আপনাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসা করবে। আপনাকে যা জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিকমত আনসার দিবেন। রিমান্ড মানে অন্য কিছু না, যে মারধর করবে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে। রিমান্ড মানে ভয়ভীতির কিছু না।’
জবাবে কাজী ইব্রাহীম আদালতকে বলেন, ‘রিমান্ডের আগেই মার খেয়েছি।’ একটি হাত উচিয়ে দেখান এবং বলেন এই হাতে ব্যথা।
এর আগে, আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক শুনানিতে বলেন, পরীমনি আদালতে আসলে আনন্দ হয়। তাকে সানন্দে গ্রহণ করা হয়। আর একজন আন্তর্জাতিক মানের আলেমকে দুই হাতে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
তারও আগে, বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট পবিত্র কুরআনের সূরা ইউসুফের সঙ্গে মিলে যায়— এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা চান বিচারক।
জবাবে ইব্রাহীম আদালতকে বলেন, ‘তৎকালীন মিশর সরকার নিজেই হযরত ইউসুফকে (আ.) শাসকের দায়িত্ব দেন। আমার থিম ও স্বপ্ন হলো- বাংলাদেশের সরকারও এক সময় এমন কোনো একজন যোগ্য আলেম লোককে দায়িত্ব দেবেন। শাসক ও আলেম মিলে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। বাংলা মাকে একবার উদ্ধার করেছিলাম ৩০ লাখ সন্তানের জীবনের বিনিময়ে। সেই বাংলা মাকে আবার নতুন শত্রু গ্রাস করেছে। আরেক নির্যাতনের সাথে পড়ে গেছে এ দেশ। সেখান থেকে বাংলা মাকে মুক্ত করতে হবে। আমি বলেছি এই দেশের শাসক বাম দিকে চলে গেছে। তাদের সঠিক পথে থাকতেই আমি এই বক্তব্য দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বা শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য দেইনি। বরং তাদের পক্ষেই কথা বলেছি। বঙ্গবন্ধু এ দেশকে ভালোবেসে ছিলেন। বিনিময়ে তার বুক ঝাঁঝড়া করে দেওয়া হয়েছে। মাকে যে ভালোবাসে তারই এ পরিণতি হয়।
এ সময় জাতীয় সঙ্গীতের একটি লাইন, মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি… বলে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
সারাবাংলা/এআই/একেএম