‘অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও বাজে নেশায় বাড়ছে হৃদরোগ’
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০০:১৮
ঢাকা: স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেছেন, দেশে আশঙ্কাজনকহারে হার্টের রোগী বাড়ছে। শুধু যে শহরের আর ধনী লোকদের এ রোগ হচ্ছে তা নয়, গ্রামের গরীব লোকরাও হার্টের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর কারণ আমাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং বাজে নেশা।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারের যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ এই ওয়েবিনার আয়োজন করে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, হার্টের অসুখের অন্যতম কারণ ধূমপান। এই ধূমপানের পক্ষে বলার মতো কোনো কারণ নেই। তবুও এ অকাজের জিনিসটা যে কেন মানুষ খায়, আমি জানি না।
তিনি বলেন, ক্ষতিকারক জিনিসের প্রতি যেন মানুষের আগ্রহ বেশি। মাদকাসক্তিতে কেন যে আমাদের ছেলেরা জড়ায়, কি কারণে যে এটার প্রতি তাদের এতো আগ্রহ, এর পক্ষে যদি কোনো একটা কারণ বলতে পারতো তাহলে আমরা বিবেচনা করে দেখতাম। শিক্ষক, চিকিৎসকরা যেখানে এর বিরুদ্ধে বলছে, আর ছেলেরা এটাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন ধূমপান যারা করে, তাদের খুবই আনস্মার্ট এবং বাজে ভাবতাম। না করলেই বরং স্মার্ট মনে করতাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ঠিক উল্টোটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ক্যাম্পেইনে ৭৫ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। এটা আমাদের জন্য বিশাল কৃতিত্বের বিষয়। আমাদের ভ্যাকসিন কার্যক্রমকে এভাবেই আমরা চালিয়ে নিয়ে যাব এবং আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সবার জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিতে দেশে চিকিৎসা সেবার বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। দেশে এখনও হৃদরোগের চিকিৎসা ঢাকা-কেন্দ্রিক। সবার জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে হৃদরোগের সর্বাধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। এরপর ধীরে ধীরে তা জেলা পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে।
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক।
তিনি বলেন, দেশে স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত যে অবকাঠামো রয়েছে তা অত্যন্ত শক্তিশালী। এটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে হৃদরোগসহ অন্য যেকোনো রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। হৃদরোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
তিনি বলেন, অনেকের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হয় না। সে জন্য হতদরিদ্রদের চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারের নেয়া উচিত। অন্যদিকে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
সারাবাংলা/এসবি