ইউরোপে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাধা নেই: বিজিএমইএ সভাপতি
২ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৫৬
ঢাকা: ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বড় কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। তবে আমেরিকার বাজারে জিএসপি (শুল্কমুক্ত) সুবিধা পাওয়া সহজ বিষয় নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের তৈরি পোশাক খাতের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি এবং ব্রান্ডিংয়ের লক্ষ্যে বিজিএমইএর নেতারা আমেরিকায় মাসব্যাপী সফর করেন। সফরে শিল্পের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন মহল, স্টেকহোল্ডার ও ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সফর পরবর্তী অর্জন তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমেরিকার বাজারে গার্মেন্টেসের ক্ষেত্রে জিএসপি (শুল্ক মুক্ত সুবিধা) সুবিধা পাওয়ার সহজ বিষয় নয়। এখানে রাজনৈতিক বিষয় জড়িত। তবে আমেরিকার বাজারের জিএসপি সুবিধা পেতে শর্তগুলো পূরণ করেছি, আশা করছি জিএসপি সুবিধা পাব।
এদিকে ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর এই নেতা। ফারুক হাসান বলেন, ইউরোপ আমাদের প্রধান বাজার, যেখানে আমাদের ৬০ শতাংশ রফতানি হয়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের মাধ্যমে এই বাজারটিতে আমাদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় পরিবর্তন আসবে। যদিও বা বর্তমান সুবিধা ২০২৯ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে, এরপরও যেন আরও অন্তত ১২ বছর এই সুবিধা (অর্থাৎ ইবিএ) বহাল রাখা হয় তার জন্য সরকার এবং বিজিএমইএ একসঙ্গে কাজ করছে। আমরা ইবিএ পরবর্তী শুল্কসুবিধা ’জিএসপি প্লাসের’ বিষয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং ব্রাসেলসে একাধিক বৈঠক করেছি। বিশেষ করে জিএসপি প্লাসের একটি অন্যতম শর্ত ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ইমপোর্ট থ্রেশোল্ড থেকে অব্যাহতি দেয়া বা এর বিকল্প ফর্মুলা প্রবর্তনের অনুরোধ করেছিলাম। তিনি বলেন, আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের প্রস্তাবিত ২০২৪-২০৩৪ জিএসপি রেগুলেশনে এই ইম্পোর্ট থ্রেশোল্ড শর্তটি বাদ দিয়েছে। ফলে, আমরা যখনই ইবিএ সুবিধা হারাই না কেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে আর বড় কোন বাধা থাকল না।
ফারুক হাসান বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় আমাদের পোশাক রফতানি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে শিল্পে নতুন নতুন কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হচ্ছে—যেমন আমি বলেছি যে, বিশ্বব্যাপী ফ্রেইট ব্যবস্থাপনা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় কন্টেইনার ভাড়া ২০০ থেকে ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ফ্রেইট খরচ কমানোর জন্য ক্রেতাদের মধ্যে নেয়ারশোরিং এর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ ক্রেতারা এখন নিকটস্থ দেশ থেকে কিছুটা বেশি দামে হলেও পোশাক ক্রয় করছেন, কারণ এতে ফ্রেইট কস্ট কম লাগছে, আর এতে লিড টাইম কমে আসছে। এই বিষয়টি আমাদের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ। এছাড়াও আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দরপতন এবং স্থানীয় পর্যায়ে কিছু সমস্যা।
আরও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে করণীয় বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য প্রদত্ত ঋণ পরিশোধের কিস্তির সংখ্যা ১৮টির পরিবর্তে ৩৬টি করা প্রয়োজন। লোকাল ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাঁচামাল, সুতা ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদির ক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যার হাউজ লাইসেন্স থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত করা প্রয়োজন। গ্রুপ অব কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি হলে সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ না করা। বন্ড লাইসেন্সে এইচএস কোড ও কাঁচামালের বিবরণ অন্তর্ভুক্তির জটিলতা নিরসন করা। সূতা থেকে নিট গার্মেন্টস উৎপাদনে অপচয় হার বৃদ্ধির কারণে জরিমানা আরোপ না করা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আইই