Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘হাইকোর্ট বিভাগের ওপরে রাষ্ট্রের কোনো ভরসা নেই’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ অক্টোবর ২০২১ ২১:৫৪

ঢাকা: রাষ্ট্রের হাইকোর্ট বিভাগের ওপরে কোনো ভরসা নেই, কোনো শ্রদ্ধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমান মান্নার ‘কারাবাসের বাইশ মাস’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

শাহদীন মালিক বলেন, ‘অপরাধী রাষ্ট্র কয়েকটি ধাপে ধাপে তৈরি হয়। এর প্রথম ধাপ হলো একটা কর্তৃত্ববাদী সরকার হয়। দ্বিতীয় ধাপে কর্তৃত্ববাদী সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। তৃতীয় ধাপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটা সংগঠিত চক্রে রুপ নেয়। সবাই না, আস্তে আস্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্রমশ বড় হয়ে নিজেরাই ক্রিমিনাল গ্যাং হয়ে যায়। তারপর আস্তে আস্তে রাজনীতিতে ক্রিমিনালদের বিস্তার বাড়ে, প্রভাব বাড়ে। তারপর এককটি দেশ একেকটি সন্ত্রাসী জমিদারি হয়ে যায়। পৃথিবীতে এ রকম ৫০টি দেশ রয়েছে।’

নিজের জীবন ভাবনার প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “একটি সত্যি কথা বলি, জন্মসূত্রে আমার স্ত্রী-সন্তান তারা বিদেশি নাগরিক। আমি অনেকবার অফার পেয়েছি, তারপরও সবুজ পাসপোর্ট ছাড়িনি। এখন ভাবছি আমাদেরটা ক্রিমিনাল স্টেট হয়ে গেলে, স্ত্রীকে বিয়ে করেছিলাম এক শর্তে, বলেছিলাম ‘তুমি তোমার পাসপোর্ট রাখবে, আমি আমার পাসপোর্ট রাখবো। আর আমরা থাকবো বাংলাদেশে’। আমার এখন মনে হয় ৩০-৩৫ বছর পরে এসে আমি এই শর্তটি ভাঙবো। এখন ঝামেলায় পড়লে তার (স্ত্রীর) দেশে চলে যাবো। আমি আশা করছি আমার এসব হিসাব ভুল হোক, আমি আতঙ্কবাদী হয়ে গেছি।”

২০০৩ সালে যৌথ অভিযান দায়মুক্তি আইন ও অপারেশন ক্লিন হার্ট কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, এখানে রিজভী সাহেব গোস্বা করবেন। আপনাদের খেয়াল আছে, ২০০৩ সালে যৌথ অভিযান দায়মুক্তি আইন (অপারেশন ক্লিন হার্ট) করা হয়েছিল। এরপর দুই-আড়াই বছরে এই প্রক্রিয়ায় কিছু পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছিল ৬১ জন, কিছু পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছিল ৫৭ জন হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। বহু লোক আহত হলেন, বাড়িঘর ধ্বংস হলো, সহায় সম্পত্তি নষ্ট হলো। আমাদের মহান সংসদ আইন পাস করলো যৌথ অভিযান দায় মুক্তি আইন। এর ফলে কোন কারণে কেউ কোন আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে না। পরে আদালত ওই আইন বাতিল করল এবং রায়ে বলল ওই সময় অপারেশন ক্লিন হার্টে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখন যদি তারা ক্ষতিপূরণ চায় সরকারকে বললো ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ রাখতে। বহু আগের কথা। কেউ আসে না।’

বিজ্ঞাপন

আইনজীবী শাহদীন মালিক আরও বলেন, ‘এখন যেটা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগের ওপর রাষ্ট্রের কোনো ভরসা নাই, শ্রদ্ধা নাই। কেউ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন পায় না, ডিস্ট্রিক্ট জজের কাছে গেলে জামিন পায় না, তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসে আপিল করে। হাইকোর্টে আসে অনেক সময় একদিন শুনে, আবার অনেক সময় লম্বা তিন-চার দিন শুনানি করে হাইকোর্ট জামিন দেন। প্রত্যেকটা মামলায় সরকার জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেছে।’

‘একটা লোকের বিচার পাওয়ার জন্য, বিচার পেতে যদি তিনি নিঃস্ব হয়ে যান। তাহলে তো বিচারের মানে থাকলো না। মিথ্যা মামলা, বিনা কারণের মামলায় এরকম কত লোক যে নিঃস্ব হচ্ছেন, এটার ব্যাপারে কেন জানি না আমাদের বিচার বিভাগের কেউই আমলে নেন না। জামিন পেতে গিয়ে বিচারপ্রার্থী নিঃস্ব হয়ে গেল। আর মূল মামলা তো পড়েই আছে’, বলেন এই আইনজীবী।

তিনি আরও বলেন, ‘মান্না ভাইয়ের মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে আমার যেটা সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে, ওনি তো আজকের নেতা না, গত ৪৫ বছর ধরে নেতা। তার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ হয়েছে এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’

এস এম এ কবীর হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, রাজনীতিবিদ জাহেদ-উর-রহমান, সেলিম ভূঁইয়াসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও

মাহমুদুর রহমান মান্না শাহদীন মালিক হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

অটোরিকশা সংকটের সমাধান কোথায়?
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৬

অভিনয় ছাড়তে চেয়েছিলেন অভিষেক
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬

আরো

সম্পর্কিত খবর