Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতির দ্বিগুণ ভ্যাকসিন দিচ্ছে কোভ্যাক্স

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩ অক্টোবর ২০২১ ০০:০৯

ঢাকা: বিশ্বজুড়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোতে ভ্যাকসিন বণ্টনে কাজ করছে কোভ্যাক্স (কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি)। ২০২০ সালের নভেম্বরে জানানো হয়, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশকে ভ্যাকসিন দেবে কোভ্যাক্স। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ছয় কোটি ৮০ লাখ ভ্যাকসিন পাঠানো হবে বলে জানানো হয়।

তবে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে কোভ্যাক্স দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ৪০ শতাংশের জন্য ভ্যাকসিন দিতে রাজি হয়েছে। অর্থাৎ কোভ্যাক্স থেকেই এখন ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ। যার ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ আসবে ডিসেম্বরের মধ্যে। এ সময়ে অন্যান্য মাধ্যম থেকেও (চীন ও ভারত থেকে কেনা) ভ্যাকসিন আসবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২ অক্টোবর) সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান।

তিনি জানান, ১ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

মাইদুল জানান, বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে বেশ ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আলোচনার প্রথম পর্যায়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

বিবৃতিতে জানানো হয়, দেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী আমরা ৪০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠানোর অনুরোধ জানালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ক্রমে দ্রুতই ৪০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠাতে সম্মত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভব হবে এবং খুব অল্প সময়েই দেশের ৪০ ভাগ মানুষের জন্য কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ভ্যকসিন পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য মাধ্যম থেকেও আমাদের ভ্যাকসিন কেনার কাজটি চলমান থাকবে।’

বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, দ্বি-পাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটিতে বাংলাদেশেই ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য কারিগরি সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। পাশাপাশি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ভ্যাকসিন টেস্টিং ক্যাপাসিটি অব দ্য ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির অ্যাক্রিজিটেশন দেওয়ার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে জানানো হয়, দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে গত দেড় বছরে কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ কী কী উদ্যোগ নিয়েছে তা তুলে ধরলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভ্যাকসিন প্রদানে বাংলাদেশের সফলতার কথা উল্লেখ করেন এবং দু’টি বড় মাপের সফল ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন করার বিষয়টিও তুলে ধরেন। এর মধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী ৮০ লাখেরও বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এই কাজে সরকারি, বেসরকারি মিলে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ভ্যাকসিন প্রদানে বাংলাদেশ নজির সৃষ্টি করেছে বলে জানান। তিনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। জাহিদ মালেক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের কাছে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ফাইজার ও মডার্ণার ভ্যাকসিন আরও বেশি সংখ্যক পরিমাণে পাওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।

বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব কামরুল হাসান, উপসচিব মো. সাদেকুল ইসলাম ও ঢাকার তেজগাঁও হেলথ কমপ্লেক্স’র স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মফিজুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত ছিলেন বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।

উল্লেখ্য, কোভ্যাক্সে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ছাড়াও রয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন এবং দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। কোভ্যাক্সের লক্ষ্য হচ্ছে, ভ্যাকসিন মজুত না রেখে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোতে তা বণ্টন করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে উৎসাহিত করা।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

৪০ শতাংশ কোভ্যাক্স

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর