গর্ভপাতের অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ
৩ অক্টোবর ২০২১ ১০:১৬
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের গর্ভপাত করার অধিকারের সমর্থনে ৫০টি রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। দেশটির টেক্সাস রাজ্য করা একটি নতুন আইনের বিরোধিতা করে তারা এই সমাবেশের আয়োজন করে। ওই নতুন আইনে গর্ভপাতকে সীমিত করা হয়েছে। খবর বিবিসি।
সমর্থকদের আশঙ্কা নতুন আইনের মাধ্যমে তাদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হতে পারে। আগামীতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এমন একটি মামলার বিষয়ে শুনানি করতে যাচ্ছেন, যা ‘রো ভি ওয়েড’ আইনকে বাতিল করতে পারে- এই আইনের মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে দেশটিতে গর্ভপাতকে বৈধতা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসি শহরে বিক্ষোভকারীরা সুপ্রিম কোর্ট ভবনের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় তাদের হাতে নানা ধরনের স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড ছিল, সেখানে লেখা ছিল ‘গর্ভপাতকে বৈধ করুন’।
তবে বিক্ষোভ সমাবেশের শুরুর দিকে গর্ভপাত বিরোধীরাও জমায়েত করেন। তবে উপস্থিতির সেই সংখ্যা খুবই অল্প। তারা বিক্ষোভ সমাবেশকে ব্যাহত করার জন্য গর্ভপাত বিরোধীরা এই উদ্যোগ নেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া এক নারী জানান, তিনি গর্ভপাত করার অধিকারকে সমর্থন করেন। রবিন হর্ন নামের এই নারী সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’কে জানিয়েছেন, যদিও আমাকে গর্ভপাতের মতো বিষয়ের কখনো মুখোমুখি হতে হয়নি। তবে অনেক নারী আছেন যাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু তখন সরকার বা দায়ী পুরুষ কোনো দায়িত্ব পালন করে না।
দেশটির নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ওমেন মার্চ এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন। এর আগে ২০১৭ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার একদিন পর সংগঠনটি প্রথম গর্ভপাত করার অধিকারের দাবিতে সমাবেশ করেছিল, ওই সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ জমায়েত হয়েছিল।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে টেক্সাসে গর্ভপাত বন্ধে করা নতুন আইনের নিন্দা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একইসঙ্গে নারীদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।
এক বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেছিলেন, এই ‘কঠোর’ আইন ‘স্পষ্টভাবে’ অধিকার লঙ্ঘন করেছে। এই আইন স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার ‘উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে’। তার প্রশাসন বর্তমান আইন দ্বারা নারীদের অধিকারগুলোকে রক্ষা করবে, যা প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে বহাল রয়েছে।
আরও পড়ুন: গর্ভপাত বন্ধে টেক্সাসে নতুন আইন, বাইডেনের নিন্দা
গর্ভপাত বিরোধীদের আন্দোলনের পর এই আইন করা হয়। ভ্রুণের হৃস্পন্দন শুনতে পারার পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন তারা। কিন্তু এটি এমন একটি সময় যখন অনেক নারী বুঝতেও পারেন না তারা গর্ভবতী হয়েছেন। তথাকথিত এই ‘হার্টবিট অ্যাক্ট’ ছয় মাসের পর গর্ভপাত করানোর কারণে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য যেকোনো ব্যক্তিকে অধিকার দেয়।
দেশটির চিকিৎসক ও নারীদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করা গোষ্ঠীগুলো এই আইনের তীব্র সমালোচনা করেছে। যা দেশটির সবচেয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক আইন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
সারাবাংলা/এনএস