হিলিতে আমদানি কমায় বেড়েছে পেঁয়াজের দাম
৪ অক্টোবর ২০২১ ১৮:১০
হিলি (দিনাজপুর): ভারতে বিভিন্ন প্রদেশে অতিবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের ফসল নষ্ট হওয়ায় বুকিং রেট বেড়েছে। ফলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি কমেছে। আর চাহিদার তুলনায় আমদানি কমায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দুই দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা আর খুচরা বাজারে বেড়েছে ২০ টাকা।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হিলি বন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা জানান, ভারতে বুকিং রেট বৃদ্ধি অন্যদিকে অতিরিক্ত গরমে অপরিপক্ক পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানের আশঙ্কায় আমদানির পরিমাণ কমানো হয়েছে। যার ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
হিলি বন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বন্দরে দুই দিনের ব্যবধানে আমদানি করা সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাইকারিতে দুই দিন আগে যে পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, সেই পেঁয়াজ আজ (সোমবার) কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে খুচরা বাজারে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। প্রতিবছর অক্টোবরে পেঁয়াজের দাম নানা অজুহাতে বেড়ে যায়, আর এতে চরম বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ ক্রেতাদের।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, প্রতিদিন এই বন্দরে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে, সেখানে বর্তমানে আমদানি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক। কাস্টমস জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে ১৭২টি ট্রাকে মাত্র সাড়ে চার হাজার মেট্টিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
হিলি বাজারের পেঁয়াজের খুচরা বিক্রেতা শাকিল জানান, হঠাৎ করে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহের থেকে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের বিক্রিও কমে গেছে।
হিলি বন্দরের পাইকার রহমত আলী জানান, হঠাৎ করে বন্দরের আমদানি কমার অজুহাতে আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম বেশি চাচ্ছে। বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কারণ আড়তগুলোতে ক্রেতা কমায় বিক্রিও কমে গেছে। ফলে পেঁয়াজ কিনতে সমস্যা হচ্ছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা সৈকত, আশরাফ ও নাবিল জানান, কয়েকদিন থেকে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি চাচ্ছে। আমরা সাধারণ ক্রেতা, বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে সমস্যা হচ্ছে। দাম কম হলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগের তুলনায় পেঁয়াজের আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের অতিবৃষ্টির ফলে পেঁয়াজের ফসল নষ্ট হয়েছে। এ কারণে ভারতের ব্যবসায়ীরা বুকিং রেট বাড়িয়েছে, আর বেশি দামে কিনে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে যেসব পেঁয়াজ ভারত রফতানি করছে সেগুলো অপরিপক্ক হওয়ায় বেশির ভাগ রাস্তায় পঁচে যাচ্ছে। তাই লোকসানে আশঙ্কায় আমরা আমদানি কম করছি।
তিনি আরও জানান, চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্যটি সরবরাহ কমে যাবার কারণে দামটা বেড়েছে, দুর্গাপূজা পর্যন্ত এমন থাকতে পারে। পরে দাম আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে মনে করেন।
হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক জানান, হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল তাই পণ্যটি দ্রুত ছাড় করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
সারাবাংলা/এনএস