Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হলে উঠছেন শিক্ষার্থীরা, ক্যাম্পাসে প্রাণের সঞ্চার

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৫ অক্টোবর ২০২১ ১১:৪২

শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হচ্ছে, ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ‘হল খুলে দিয়েছে, এই মুহূর্তে এর চেয়ে ভালো সংবাদ আমাদের জন্য অন্য কিছুই হতে পারে না। দেড় বছর বিশাল একটা সময়। আসলে কখনোই ভাবিনি যে, এত সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ থাকতে পারে’— এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান। দীর্ঘ আঠারো মাস পর তিনি আজ মঙ্গলবার ( ৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হলে আসেন।

মিজানের মতো অনেক শিক্ষার্থীর পদচারণায় আজ মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ মাঠ। ক্যাম্পাসে যেন আজ শিক্ষার্থীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো শিক্ষার্থীরা ফিরছেন নতুন এক ভিন্ন পরিবেশে। যেন করোনার থাবায় চুপসে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা গেছে, পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ ও হাউজ টিউটরদের তদারকিতে ন্যূনতম একডোজ ভ্যাকসিনের সনদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলে উঠছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ঘুরে একই চিত্রের দেখা মেলে— বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা হলে উঠছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন পর হলে আসতে পেরে তারা আনন্দিত। খানিক আবেগ ও উচ্ছ্বাসে অচলায়তন ভাঙার অংশ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

হলগুলোর প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেন হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ ও হাউজ টিউটররা। ফুল হাতে শিক্ষার্থীদের বরণ করতে দেখা গেছে শিক্ষকদের।

বিজ্ঞাপন

হলে প্রবেশ করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাসনাত রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভ্যাকসিনের কার্ড ও পরিচয় পত্র দেখিয়ে হলে প্রবেশ করেছি। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে হল পর্যায়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে দেখে স্বস্তি পাচ্ছি।’

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় ন্যূনতম একডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ সাপেক্ষে ৫ অক্টোবর প্রথম পর্যায়ে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও বিজ্ঞান গ্রন্থাগার খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল ঢাবি কর্তৃপক্ষ। সেই অনুযায়ী ২৬ সেপ্টেম্বরেই গ্রন্থাগারগুলো খুলে দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের হলে উঠানো প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সকাল ৮টা থেকেই শিক্ষার্থীদের হলে উঠাচ্ছি। প্রক্রিয়াটি চলছে। সুষ্ঠু পরিবেশে নির্দিষ্ট পরিচয় পত্র ও ভ্যাকসিনের কার্ড দেখিয়ে হলে উঠছে শিক্ষার্থীরা।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। আজ সকাল দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ফিরে আসায় শিক্ষক ও প্রশাসনে প্রাণচাঞ্চল্য এসেছে। সবার মনে আনন্দ, এটা সবচেয়ে বড় দিক। আজকের দিনটি আমাদের জন্য ঈদের মতো।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিবেচনায় ২০২০ সালের ১৯ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে অবশেষে দীর্ঘ আঠারো মাস পর আজ (মঙ্গলবার) শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো।

সারাবাংলা/আরআইআর/এনএস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর