কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজসহ একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন
৫ অক্টোবর ২০২১ ১৩:৪২
ঢাকা: কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ ৯ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৫৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৭৪২ কোটি ২৯ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ২ হাজার ৭৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং আইএমইডির সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীসহ পরিকল্পনা কমিশনের অন্য সদস্যরা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কাজ শেষ করতে চূড়ান্ত ভাবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। যারা এই প্রকল্পের বিলম্বের ক্ষেত্রে জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একইসঙ্গে কাজও চলমান রাখতে বলেছেন।’
জানা যায়, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য ২০১২ সালের ৬ মার্চ একনেকে অনুমোদিত হয়েছিল প্রকল্পটি।
এরপর প্রকল্পের মেয়াদ ব্যয় প্রথম দফায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এরপর মোট ৬১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ বছর বাড়িয়ে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন প্রস্তাব ২০১৮ সালের ২১ জুন একনেকে অনুমোদিত হয়। এতেও শেষ হয়নি বাস্তবায়ন।
ফলে ২০১৯ সালের জুনে প্রকল্পটির আন্তঃখাত সমন্বয় করা হয়। কার্যক্রম বিভাগ ২০২০ সালের ২২ জুন প্রকল্পটির মেয়াদ ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছর বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৪২ কোটি টাকা এবং মেয়াদ ২০১২ সালের জানুয়ারি হতে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এই প্রস্তাবের ওপর ২০২০ সালের ১২ মার্চ প্রথম প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) প্রথম পিইসি সভার সিদ্ধান্তে সঠিকভাবে প্রতিপালন না করায় ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট দ্বিতীয় পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় পিইসি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে পুনর্গঠিত ডিপিপি চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় উপস্থিত সভায় উপস্থাপিত হলে এই প্রস্তাব অনুমোদন না করে প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেরি হওয়ার কারণ এবং দায়দায়িত্ব নিরুপণ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং ভালোভাবে পরীক্ষা করে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য যথানিয়মে পুনরায় একনেকে উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
একনেক সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ৫ জানুয়ারি আইএমইডির সচিবকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। গত ১ জুন আইএমইডি তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে পাঠানো পাঠায়। এখন ৬৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার (ফেজ-৩) প্রকল্প। টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার-লাউহাটি-সাটরিয়া-কাওয়ালীপাড়া-কালামপুর বাসস্ট্যান্ড সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প। জগন্নাথপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) স্থাপন প্রকল্প।
এছাড়া রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোটনদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প। শরীয়তপুর জেলার কীর্তিনাশা নদীর ডান ও বাম তীর রক্ষা প্রকল্প। বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন প্রকল্প। খুলনা হতে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/জেজে/এমও