বরিশালে ই-কমার্স প্রতারক স্বামী-স্ত্রী-ছেলে গ্রেফতার
৬ অক্টোবর ২০২১ ২০:৫৯
বরিশাল: বরিশালে ই-কমার্স প্রতারক স্বামী-স্ত্রী-ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. জাকির হোসেন মজুমদার এ তথ্য জানান।
এর আগে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় নগরীর পূর্ব বিল্ববাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হলেন নগরীর কাউনিয়া থানাধীন কাগাশুরা এলাকার মৃত বারেক শেখের মেয়ে মোসা. শাহিনুর বেগম (৪৩), তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা (৩৬) ও ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল (১৭)। বুধবার (৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. জাকির হোসেন মজুমদার এ তথ্য জানান।
উপ-কমিশনার জাকির হোসেন মজুমদার জানান, কাগাশুরা এলাকায় বারেক শেখ সুপার মার্কেটে ‘বন্ধুজন ফার্নিচার মেলা অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ স্টোর’ নামে একটি দোকান খুলে শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল। গত একবছর ধরে ফার্নিচার, গ্রোসারি জিনিস কম মূল্য কিস্তির মাধ্যমে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় হাজারখানেক মানুষের কাছ থেকে সপ্তাহে ২০০ টাকা আবার কারও কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা নিত। তারা মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য টাকার রশিদ দিতো। কিন্তু তাদের টাকা নেওয়ার আইনগত কোনো ভিত্তি ছিল না। এভাবে গত ১ বছর গ্রাহকদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। তবে টাকা নিয়ে কয়েকজনকে তারা কিছু পণ্য দিয়েছে। পরবর্তীতে পণ্য দেওয়া বন্ধ করলে টাকা ফেরত চায় ভুক্তভোগীরা।
পুলিশে এ কর্মকর্তা আরও জানান, এটি হচ্ছে ই-কমার্সের মিনি ভার্সন। তারা জালিয়াতি ও প্রতারণার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। ওই প্রতারকরা মানুষকে বলত, কোনো জিনিসের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করতে না পারলে অর্ধেক মূল্য জমা দিয়ে তাদের কাছ থেকে মালামাল নিতে পারবেন ও বাকি মূল্য মালামাল নেওয়ার পর অল্প অল্প করে কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলত, ‘৫ হাজার টাকা জমা হলে ১ লাখ টাকা লোন নিতে পারবেন। তাদের এ সব কথায় বিশ্বাস করে পূর্ববিল্ববাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. ইউসুফ হাওলাদারের স্ত্রী লাইলী আক্তার প্রতিদিন ১০/২০/৩০ টাকা করে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৫৫০ টাকা জমা দিয়েছেন। এখন তাকে পণ্য বা টাকা ফেরত না দেওয়ায় তিনি বাদী হয়ে এ তিনজনের নামে একটি প্রতারণা ও আত্মসাতের মামলা দায়ের করেন।’
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভুক্তভোগীরা ওই তিন প্রতারককে আটকে রেখে এয়ারপোর্ট থানায় খবর দেয়। পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে।
আটক আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এরমধ্য শাহারিয়ার ইসলাম শাকিলকে সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। বাকি দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. ফজলুল করিম ফজলু, কাউনিয়া ও এয়ারপোর্ট থানার সহকারী কমিশনার মো. রবিউল ইসলাম শামীম, এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/একে