রাতে ভোগান্তি বাড়াচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতু
৭ অক্টোবর ২০২১ ০৮:২৪
সিরাজগঞ্জ: বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতুসহ অসংখ্য খানাখন্দের জন্য দিনকে দিন গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এর মাঝে একটু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কখনও ধীরগতি, কখনও থেমে থেমে, আবার কখনও দীর্ঘস্থায়ী যানজট লেগে থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কে ফুলজোড় নদীর ওপর নলকা সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে সেতুটি আঞ্চলিক মহাসড়কে পরিণত হলেও সেতুটির কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হয়নি। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুর উদ্ধোধনের পর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২২টি জেলার যানবাহন চলাচল করছে এই সেতুর উপর দিয়েই। এতে সেতুটি একেবারেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের নলকা সেতুর বিভিন্ন জায়গায় পিচ ও পাথর উঠে গেছে। সেতুর জয়েন্টগুলোও হয়ে পড়েছে নড়বড়ে। এছাড়া পশ্চিম পাশে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্তও। সেতুর উভয় পাশে অন্তত ৪০-৫০ মিটার দূর থেকেই গাড়ির গতি কমিয়ে দিতে হচ্ছে। এ কারণে সেতুর উভয় পাশে প্রায় দিনই জটে আটকে যাচ্ছে শত শত যানবাহন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেতুটি মাঝে-মধ্যে সংস্কার করলেও বৃষ্টিপাতের কারণে পিচ উঠে যাওয়ায় এক্সপানশন জয়েন্টগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এলাকার ট্রাক ড্রাইভার মিজান জানান, নলকা সেতু ও সেতুর পশ্চিমের সড়ক সংস্কার না করায় ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনগুলোকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। যার কারণে সেতুর উভয় পাশে বিশাল এলাকা জুড়ে যানজট লেগেই থাকছে।
এসআই পরিবহনের চালক আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাটিকুমরুল গোলচত্বর মহাসড়ক এলাকায় ঢুকলেই যানজট আতঙ্ক শুরু হয়। শুরু হয় অপেক্ষার পালা আর ভোগান্তি। রাতে যখন পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যায়, তখন যানজট আরও দীর্ঘ হয়। তাই তো সবাই বলে, ভোগান্তির আরেক নাম নলকা সেতু।’
হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘নলকা সেতুর দু’পাশে ছোট, বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর উপরের কার্পেটিংও উঠে গেছে। ফলে সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলাচলে গতিসীমা কম রাখতে গিয়ে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যায়। সেতুর পশ্চিম পাশে মহাসড়কের কিছু জায়গায় ছোট-বড় খানাখন্দের কারণেই এই যানজট রাতে আরও বৃদ্ধি পায়।’
হাইওয়ে পুলিশের (বগুড়া অঞ্চল) পুলিশ সুপার মুনশী শাহাবুদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় একটি লেনে গাড়ি ছাড়তে হয়। এছাড়া সেতুর উভয় পাশে রাস্তা খানাখন্দ হওয়ায় গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলছে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম তরফদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘সেতুর পশ্চিম পাশে বেশ কিছু ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো দ্রুতই কার্পেটিং করা হবে।’
সারাবাংলা/পিটিএম