Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুড়ঙ্গের খনন শেষ, বঙ্গবন্ধু টানেলের দু’পাড়ে ‘আশার আলো’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ অক্টোবর ২০২১ ২১:১০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দু’টি সুড়ঙ্গেরই খননকাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে টানেল প্রকল্পের সবচেয়ে জটিল হিসেবে চিহ্নিত কাজ সময়ের মধ্যেই করতে পেরেছেন সংশ্লিষ্টরা। এবার সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে সড়ক তৈরিসহ আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করার পালা। এসব কাজ শেষ করে আগামী বছরের ডিসেম্বরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টানেলের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল শুরুর আশা প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টানেলে দ্বিতীয় সুড়ঙ্গের খনন কাজ শেষ হয়, যা চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে শহরের পতেঙ্গা প্রান্তে এসে মিশেছে। এর আগে, গত বছরের ২ আগস্ট প্রথম সুড়ঙ্গের খনন কাজ শেষ হয়। সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানেল প্রকল্পে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজ এগিয়েছে ৭৩ শতাংশ।

টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘টানেলে দুটি সুড়ঙ্গপথ আছে। এর মধ্যে প্রথম সুড়ঙ্গের কাজ আমরা গতবছরই শেষ করেছি। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গের কাজ আমরা গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেষ করেছি। তার অর্থ এই নয় যে, এই মুহূর্তে আমরা সুড়ঙ্গগুলো খুলে দিতে পারব। টিউবের খনন কাজে ব্যবহৃত টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) এখন প্রথমে আমাদের বের করে আনতে হবে। সেটা করতে ৭০ থেকে ৭৫ দিন সময় লাগবে। এরপর সড়ক নির্মাণ মানে স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হবে।’

কবে নাগাদ যানবাহনের ট্রায়াল রান শুরু হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় আছে। আমাদের জোর প্রচেষ্টা থাকবে এর মধ্যে কাজ শেষ করতে। কাজ শেষ হলে যানবাহন চলাচল শুরু হবে। যন্ত্রনির্ভর কাজে অনেক জটিলতা থাকে। যদিও জটিল কাজ শেষ হয়েছে, তারপরও আমাদের পুরো কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আল্লাহর হুকুম হলে আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেও কাজ শেষ করে ফেলতে পারব।’

সড়ক-মহাসড়কের ওপর যানবাহনের চাপ কমানো পূর্বমুখী বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং ওয়ান সিটি টু টাউন- ধারণাকে সামনে রেখে সরকার কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১৪ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও চীনের সরকারি পর্যায়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) লিমিটেড প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর। নকশা প্রণয়ন ও আনুষাঙ্গিক প্রস্তুতি শেষে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। টানেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের প্রস্তাবে টানেলের নামকরণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।

সূত্রমতে, মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গ বা টিউবের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। গভীরতা ১৮ থেকে ৩১ মিটার। প্রতিটি ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার। প্রতিটি টিউবে দুই লেন করে দুই টিউবে মোট চার লেন থাকবে। এছাড়া মূল টানেলের সঙ্গে উভয় প্রান্তে ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আবার সড়কের পূর্ব অর্থাৎ আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসেতুও নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রথম সুড়ঙ্গের নির্মাণকাজ শেষের পর ১ হাজার ৬২৩ মিটার ‘স্ল্যাব’ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। জানুয়ারিতে দ্বিতীয় সুড়ঙ্গে স্ল্যাব ঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের আশা, টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে চট্টগ্রাম শহরের ওপর গাড়ির চাপ কমবে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যেসব যানবাহন কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাবে, সেগুলো মূল শহরে প্রবেশ না করে আউটার রিং রোড হয়ে পতেঙ্গা দিয়ে টানেল হয়ে যেতে পারবে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হওয়ার পর পূর্বমুখী বাণিজ্য সম্প্রসারণে এই টানেল ভূমিকা রাখবে বলে আশা তাদের। এছাড়া টানেল চালুর পর আনোয়ারাও শহর হিসেবে গড়ে উঠবে, এমন ধারণাও সংশ্লিষ্টদের।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

টপ নিউজ বঙ্গবন্ধু টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুড়ঙ্গ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর