Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসে মারধরে রক্তাক্ত ঢাবি শিক্ষার্থী, মামলার বদলে জিডি নিল পুলিশ

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৯ অক্টোবর ২০২১ ০১:১৯

ঢাকা: রাজধানীর শান্তিনগর থেকে তরঙ্গ প্লাস বাসে বাসায় ফেরার পথে হেলপারের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফিয়া তামান্না। এ ঘটনায় তিনি রামপুরা থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন। তবে পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করিয়ে নিয়েছে। রাফিয়া তামান্নার অভিযোগ, পুলিশ ‘ক্ষমা করে দিতে’ অনুরোধ জানিয়েছে তাকে।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা মেট্রো ব- ১৫৭৭৭ নম্বরধারী তরঙ্গ প্লাস বাসে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন শুক্রবার (৮ অক্টোবর) ঢাবি প্রক্টরের হস্তক্ষেপে ওই হেলপারকে আটক করেছে পুলিশ।

বাসে নির্যাতনের শিকার রাফিয়া তামান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাফিয়া তামান্না সারাবাংলাকে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭টার দিকে শান্তিনগর থেকে তরঙ্গ প্লাস বাসে করে আমি বাসায় ফিরছিলাম। শুরু থেকেই বাসের হেলপার স্টুডেন্ট ভাড়া নিয়ে ঝামেলা শুরু করে। আমি প্রতি চেক পোস্টে স্টুডেন্ট হিসেবে হাত তুলে চেকারকে আইডি কার্ড দেখানোর চেষ্টা করি।’

রাফিয়া বলেন, ‘চেকারকে আইডি কার্ড দেখানোর চেষ্টা করেছি দেখে ওই হেলপার আমার উদ্দেশে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকে। বাস থেকে নেমে যাওয়ার আগে সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে— পরেরবার এই বাসে উঠলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে। হুমকি দেওয়ার পর বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই হেলপারকে থাপ্পড় দিই আমি। তখন সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাসের ভেতর ফেলে দিয়ে কিল -ঘুষি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার নাক দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে, হাত কেটে যায় ও শরীরের নানা স্থানে আঘাত লাগে৷’

রাফিয়া জানান, পরে বাস থেকে নেমে রামপুরা থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে মামলা করা থেকে বিরত রাখেন।

রাফিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি রামপুরা থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম আমাকে বলেন, ‘ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। আপনি ক্ষমা করে দিন। আপনি একজন শিক্ষার্থী। শ্রমিকের বিরুদ্ধে আপনি এসব মামলা করতে যাবেন?’ আমি রক্তাক্ত ছিলাম। সে অবস্থাতেও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সোলাইমান গাজী আমাকে বলেন, ‘মামলা করলে লঘু পাপে গুরুদণ্ড হয়ে যাবে।’

রাফিয়া বলেন, ‘আমি মামলা করতেই চেয়েছি। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা মামলা নিতে চাচ্ছিলেন না। বিভিন্নভাবে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন। থানায় যাওয়ার পরও আমার নাক থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। একপর্যায়ে রাত ১২টা নাগাদ বাসের ওই হেলপারকে ধরে নিয়ে আসেন তারা। পরে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে-শুনিয়ে মামলা গ্রহণের বদলে একটি জিডি নিতে রাজি হন তারা।’

এদিকে, এ ঘটনায় হেলপারকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী আমাদের কিছুই জানাননি। ঘটনা শুনে আমি মতিঝিল জোনের ডিসি, এডিসির সঙ্গে কথা বলেছি। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাতেই ওই হেলপারকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।’

সারাবাংলা/আরআইআর/আইই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর