Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ অক্টোবর ২০২১ ০০:১০

নড়াইল: বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার (১০ অক্টোবর)। ১৯৯৪ সালের এই দিনে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়।

১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এসএম সুলতান। দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা সুলতান ১৯২৮ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। স্কুলের অবসরে রাজমিস্ত্রি বাবাকে কাজে সহযোগিতা করতে করতে ছবি আঁকতেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

১৯৩৩ সালে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় জমিদার শ্যামাপ্রাসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি এঁকে তাক লাগিয়ে দেন। ১৯৩৮ সালে পড়ালেখা ছেড়ে চলে যান কলকাতায়। সেখানে চিত্রসমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে তার পরিচয় হয়। একাডেমিক যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সোহরাওয়ার্দীর সুপারিশে ১৯৪১ সালে ভর্তি হন কলকাতা আর্ট স্কুলে।

১৯৪৪ সালে কলকাতা আর্ট স্কুল ত্যাগ করে ফের ভবঘুরে জীবন বেছে নেন সুলতান। কিছু দিন কাশ্মিরের পাহাড়ে আদিসবাসীদের সঙ্গে থেকে তাদের জীবন-জীবিকাভিত্তিক ছবি আঁকেন। ১৯৪৫ সালে ভারতের সিমলায় তার প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের লাহোরেও হয় তার চিত্রপ্রদর্শনী।

১৯৫০ সালে চিত্রশিল্পীদের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে পাকিস্তান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকা যান সুলতান। এরপর ইউরোপে বেশ কয়েকটি একক-যৌথ চিত্রপ্রদর্শনীতে অংশ নেন তিনি। এ সময় পাবলো পিকাসো, সালভাদর দালি, পল ক্লীসহ খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীদের ছবির পাশে এস এম সুলতানের ছবি স্থান পায়।

বিজ্ঞাপন

১৯৫৩ সালে নড়াইলে ফিরে আসেন সুলতান। শিশু-কিশোরদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি চারুকলা শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। ১৯৬৯ সালের ১০ জুলাই ‘দ্য ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৭ সালে স্থাপিত হয় ‘শিশুস্বর্গ’। অবশ্য এর অনেক আগেই স্বপ্নের শিশুস্বর্গ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এসএম সুলতান।

এদিকে, সুলতান তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ১৯৯২ সালে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট দ্বিতল নৌকা (ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ) নির্মাণ করিয়েছিলেন। সুলতান তার শিল্পকর্মের মাধ্যমে খেটে খাওয়া মানুষ এবং সংগ্রামী জীবনের কথাই বেশি চিত্রিত করেছেন। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বাঁশিসহ নানান বাদ্যযন্ত্রে সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি। বিষধর সাপ, ভাল্লুক, বানর, খরগোশ, মদনটাক, ময়না, গিনিপিক, মুনিয়া, ষাঁড়সহ বিভিন্ন পশু-পাখি পুষতেন।

সুলতান হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি পছন্দ করতেন না বলে জানিয়েছেন সুলতানশিষ্য চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারীসহ ভক্তরা। চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে রেসিডেন্ট আর্টিস্ট, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন।

এছাড়াও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যান অব দ্য ইয়ার, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ম্যান অব এশিয়া পুরস্কার লাভ করেন।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুলতান সংগ্রহশালা চত্বরে রোববার (১০ অক্টোবর) সকালে কোরআনখানি এবং দোয়া মাহফিলসহ শিল্পীর সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সারাবাংলা/একেএম

এস এম সুলতান মৃত্যুবার্ষিকী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর